ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাঁচ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
পাঁচ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে সেতু ছুঁয়ে ফেলেছে খোয়াইয়ের পানি। ছবি: টিটু আহমেদ

ঢাকা: কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ডুবতে বসেছে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় জনপদ। এরই মধ্যে কুশিয়ারা, সুরমা, মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী বহ্মপুত্র, পদ্মা, যমুনার পানি এখনো বিপদসীমার ওপরে না উঠলেও প্রতি ঘণ্টায়ই বাড়ছে।

তবে খোয়াইয়ের পানি কমা-বাড়া নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সঙ্গে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যে কিছুটা গরমিল পাওয়া গেছে।

 

সতর্কীকরণ কেন্দ্র বিভিন্ন নদীর ৯০ টি পয়েন্ট পর্যবেক্ষণ করে মোট ৬৩টি পয়েন্টে পানি বাড়ার তথ্য দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি পয়েন্টে পাঁচটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহ্মপুত্র বেসিনে সবচেয়ে বেশি পানি বাড়ছে করতোয়ায়। গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া পয়েন্টে এ নদীর পানি ৫৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর দলীয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ সেন্টিমিটার। যমুনা নদীর সারিয়াকান্দি ও কাজীপাড়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার এবং বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।
তবে দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি বেসিনে বহ্মপুত্র বেসিনের মত নদীগুলোর পানির উচ্চতা বাড়লেও কোনো নদীর পানি বিপসীমায় নেই। এ বেসিনে ২৯৮ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার সবচেয়ে কাছাকাছি (৫৫ সেন্টিমিটার নিচে) রয়েছে পরশুরাম পয়েন্টে মুহুরী নদীর পানি।

গঙ্গা বেসিনে সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে। এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১০৮ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমা থেকে ৭০ সেন্টিমিটার নীচে। এদিকে ছোট যমুনার নওগাঁ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৮৪ সেন্টিমিটার। এরপরেই রয়েছে রাজশাহীর বিভিন্ন পয়েন্টের পদ্মা নদীর অবস্থান।
মেঘনা বেসিনের নদীগুলোর অবস্থা বিপদজনক। পূর্বাঞ্চলে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সব নদীর পানি ভাটিতে নামার একমাত্র চ্যানেল হওয়ায় মেঘনা পাড়ের জনপদগুলো এখন বেশ বিপদেই আছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকবে। এ বেসিনে খোয়াই নদীর পানি হবিগঞ্জ পয়েন্টে ২৭০ সেন্টিমিটার বেড়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। বর্তমানে এই পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আর ধলাই নদীর পানি কমলগঞ্জে ১৩৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাল্লা পয়েন্টে ১২৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খোয়াই নদীর পানি। মনু নদীর পানি ৭৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মৌলভীবাজারে।

কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর ও শেওলা পয়েন্টে বেড়েছে যথাক্রমে ৭ সেন্টিমিটার ও ১৮ সেন্টিমিটার। এক্ষেত্রে শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

আর সুরমা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ সেন্টিমিটার কমে গেলেও কানাইঘাটে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃষ্টিপাতের হিসাব কষে পাউবো বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নারায়ণহাটে ১২৫ মিলিমিটার, বরগুনার ১৪৭ মিলিমিটার, ফরিদপুরে ৯৪ দশমিক ৫ মিলিমিটার, নোয়াখালীতে ৭৩ দশমিক ৫ মিলিমিটার, বরিশালে ৬৮ দশমিক ২ মিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে মনু রেলওয়ে ব্রিজে ৫৮ মিলিমিটার, পাঁচপুকুরিয়ায় ৫৫ মিলিমিটার, ভাগ্যকূলে ৫৪ দশমিক ৭ মিলিমিটার, চাঁদপুরে ৫২ মিলিমিটার ও রামগড়ে ৪৯ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পাউবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad