২০১১ সালের পর থেকে ঈদ মৌসুমে ঢাকা-রাজশাহী রুটে কেবল বগি সংযোজন করা হতো। কোনো স্পেশাল ট্রেন দেওয়া হয়নি।
এছাড়া ২৮ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত ঈদ ফেরত যাত্রীদের পরিবহন করবে এসব ট্রেন। আর ঈদ উপলক্ষে বুধবার (২১ জুন) থেকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সব আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঈদমুখী যাত্রীদের সুবিধার্থে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এবার বিশেষ এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিন্টেডেন্ট জিয়াউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ২২ জুন বেলা দেড়টায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে দিয়েই ঈদের বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ঈদের পর ৩ জুলাই পর্যন্ত যাত্রীদের সুবিধার্থে একই নিয়েমে ব্যস্ততম এই রুটে ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি চলাচল করবে। ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর পর রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আবার রাজশাহীর উদ্দেশে কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে।
ওইদিন থেকে একই নিয়মে ঢাকা থেকেও একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। এভাবে প্রতিদিন দুই জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচল করবে। এছাড়া এই রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি, পদ্মা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস আগের নিয়মেই চলাচল করবে।
তবে ঈদ উপলক্ষে রাজশাহী-ঢাকা ছাড়া অন্য কোনো রুটে এবারও ঈদ স্পেশাল ট্রেন নেই। কিন্তু যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান চাপ সামলাতে ঈদের তিনদিন আগে থেকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহী-খুলনা রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেন সাগরদাঁড়ী এক্সপ্রেস, কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, চিলাহাটিগামী তিতুমীর এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনসহ অন্যগুলোর প্রতিটিতে বাড়তি মোট ২৮টি কোচ সংযোজন করা হবে।
এদিকে, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ১৯ জুন থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাউন্টারগুলোতে এই টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ২৫ জুন পর্যন্ত ঈদ উপলক্ষে আগাম টিকিট কিনতে পারবেন রেলওয়ের যাত্রীরা।
জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিন্টেডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল ১৯ জুন দেওয়া হয়েছে ২৮ জুনের টিকিট। মঙ্গলবার (২০ জুন) দেওয়া হয়েছে ২৯ জুনের টিকিট, আগামীকাল ২১ জুন দেওয়া হবে ৩০ জুনের টিকিট, ২২ জুন দেওয়া হবে ১ জুলাইয়ের টিকিট, ২৩ জুন দেওয়া হবে ২ জুলাইয়ের টিকিট, ২৪ জুন দেওয়া হবে ৩ জুলাইয়ের টিকিট এবং ২৫ জুন দেওয়া হবে ৪ জুলাইয়ের টিকিট। এরপর থেকে পর্যাক্রমে আগের নিয়মেই মিলবে ১০ দিন আগের টিকিট।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্বাবধানে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঈদের অগাম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। ছবি তুলে ট্রেনের টিকিটের লাইন মনিটরিং করা হচ্ছে। কালোবাজারীদের ঠেকাতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। লাইনে দাঁড়ালে টিকিট পেতে কোনো যাত্রীর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। যতক্ষণ হাতে টিকিট থাকবে ততক্ষণ বিক্রি হবে। অনিময়ের অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান পশ্চিম রেলের এই কর্মকর্তা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খায়রুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে রাজশাহী-ঢাকা রুটে নিয়মিত ট্রেনের পাশাপাশি এবার দুই জোড়া ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবার ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। যা ব্যবস্থা আছে তা দিয়ে শতভাগ সেবা দিতে পারবো বলে আমি আশা করি’।
ট্রেনের সূচিতে যাতে কোনো বিপর্যয় না ঘটে, সেদিকে তারা বাড়তি নজর রাখছেন। টিকিট কালোবাজারী রোধ এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান মহাব্যবস্থাপক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এসএস/বিএস