ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ক্ষমা চাই, আর বাজেট চাই না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
‘ক্ষমা চাই, আর বাজেট চাই না’

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: ‘অর্থমন্ত্রী আপনার কাছে মাফ চাই, ক্ষমা চাই। আপনার কাছে আমরা আর বাজেট চাই না।’ -এভাবেই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।

মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশিদ এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন,  প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৭ সালে জনগণের জন্য শ্রেষ্ঠ তামাশা। এটা কোনো বাজেটই হয় নাই। স্পিকারের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাই, মাফ চাই। দয়া করে আমাদের মুক্তি দেন। আমরা আর আপনার কাছে বাজেট চাই না। কী বাজেট আপনে দেবেন? এটা কি ভোটের বাজেট? আগামী বছর তো ভোট। নাকি ভোট নষ্ট করার বাজেট দিয়েছেন। ভোটারদের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করেছেন। ভোটারদের ওপর ভ্যাট ধরেছেন। তারপরেও ভোট চান। এ দেশের মানুষ এতো পাগল।

ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বসানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ব্যাংক আম‍ানতের ওপর আবগারি শুল্ক ধরলেন। আবগারি শুল্ক ধরা হয় মদ, গাঁজা, আফিম, ভান, বিড়ি, সিগারেটের ওপর। আপনি  জনগণের আমানতের টাকা, ন্যায্য টাকা সেই টাকার ওপর শুল্ক বসালেন। এমন বাসানো বসালেন, এখন আসল থেকে টান পড়েছে। কেনো বসালেন? এটা কী ধরনের জুলুম। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দিলেন। মানুষ টাকা রাখবে কোথায়? মানুষ কোথায় কার কাছে টাকা রাখবে? ব্যাংকে রাখতে পারবে না। টাকা কি বিদেশে নিয়ে যাবে? বিদেশে তো বড় লোকরা টাকা নিয়ে যায়। গরিবের টাকা থেকে টাকা কাটবেন। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী লুটেরাদের প্রটেকশন দিচ্ছেন।

ফিরোজ রশিদ আরও বলেন, আবগারি শুল্ক বসাইয়া, জনগণের ওপর ট্যাক্স বসাইয়া আখের গোছাবেন! আর ট্যাক্সের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ভর্তুকি দেবেন?
 
অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান করে তিনি বলেন, লুটেরাদের নাম প্রকাশ করুন। পারবেন না। আপনার সেই সৎ সাহস নেই। ইব্রাহিম খালেদ একটা রিপোর্ট দিয়েছিলেন, সেই রিপোর্টে আপনাদের দলের লোকদের অনেকেরই  নাম আসলো। প্রকাশ করলেন না। কেনো করলেন না? কেনো ব্যবস্থা নিলেন না? একদিন জনগণ ঠিকই ব্যবস্থা নেবে।

মন্ত্রীদের সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আপনারা কেবিনেটে বাজেট অনুমোদন দিয়ে এখানে সমালোচনা করেন। আপনাদের নৈতিক অধিকার কি আছে?

তিনি বলেন, শ্যালো মেশিনের ওপর ভ্যাট বসাবেন। এই শ্যালো মেশিন দিয়ে নৌকা চলে। নৌকা কিন্তু আর চলবে না। নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে!

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আয় কর ফরম এতো বড়। পূরণ করতে আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আপনার বাপ-দাদা যারা মারা গেছেন তাদের ইতিহাস লিখতে হবে। ভ্যাট আদায় করবেন তার মেশিন কোথায়? তার সাব অফিস কোথায়?

এদিন সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং ডেপুটি স্পিকারের উদ্দেশে চারটি কবিতা পাঠ করে শোনান ফিরোজ রশিদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ