ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মায়ের কবরের জমি দখলের অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
মায়ের কবরের জমি দখলের অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের কবরের জমি দখলের অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে- ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: সাফাক আরা সোবহান (৬৭) ভূতত্ত্ব বিভাগে লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক (এলডিসি) পদে চাকরি করতেন। স্বামী পিজি (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. আব্দুস সোবহানের মৃত্যু হয়েছে ২০০১ সালে।

এর আগে তিন সন্তান রেখে প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু হলে ১৯৮৩ সালে সাফাক আরাকে বিয়ে করেন ডা. আব্দুস সোবহান।

বিয়ের পর স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের দেখাশুনা করতে নিজে কোনো সন্তান নেন নি বলে জানান সাফাক আরা।

একই সঙ্গে স্বামীর কথাতেই নিজের চাকরিও ছেড়েছিলেন তিনি। সেখানেই জীবনের সব থেকে বড় ভুল করেছেন বলে মনে করছেন ৬৭ বছরের এই বৃদ্ধা।

স্বামীর মৃত্যুর পর ২০০৭ সালে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন সৎ সন্তান ঢাকা বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহবুব সোবহান।

বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার সময় নিজের নামে ক্রয় করা কবরের মাটির কাগজ পত্রও রেখে দেয় ওই ছেলে বলে অভিযোগ করেছেন সাফাক আরা। এরপর থেকেই থাকেন ফার্মগেটের একটা মহিলা হোস্টেলে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা ১২টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সন্তানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন সাফাক আরা সোবহান নামে ওই মা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর আগে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিজের জন্য, বড় মেয়েরে এবং স্ত্রী সাফাক আরার জন্য তিনটি কবরের মাটি ক্রয় করেন আব্দুস সোবহান। কিন্তু সেই কবরের কাগজপত্র এখন সৎ ছেলে ডা. মাহবুব সোবহানের কাছে।

সাফাক আরা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তাকে বিভিন্নভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন সৎ ছেলে ও তার স্ত্রী ডা. রেজিনা সুলতানা। একপর্যায়ে ২০০৭ সালের ঘুর্ণিঝড় সিডরের রাতে খালি হাতে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে জানান ওই বৃদ্ধা।

এরপর থেকে বিচারের দাবিতে বিভিন্ন নারীবাদী গোষ্ঠীর কাছে গেলেও কোনো বিচার পাইনি তিনি।

পরে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে একটি অভিযোগ করলে কিছু দিনের জন্য ছেলের কাছ থেকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে বলা হয় বলে জানান সাফাক আরা।

একই সঙ্গে কিছু দিন পর আমার সন্তানেরা আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবে অথবা সম্পত্তি বুঝিয়ে দেবে বলেও বলা হয় আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে। কিন্তু ওই সময়ে আমি বৃদ্ধাশ্রমে না উঠে একটি মহিলা হোস্টেলে উঠি। এখনো সেখানেই থাকি। তবে টাকার পরিমান পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার হলেও এখন পর্যন্ত আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি।

এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নিজের অংশের সকল সম্পদ বুঝে নিয়ে নিজের মতো নিজে থাকতে চান সাফাক আরা সোবহান।

এ বিষয়ে বারডেম হাসপাতালের ডা. শেখ মাহবুব সোবহানের সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “উনি আমার মা নন। উনি আমার সৎ মা। আর ওই বিষয়টা প্রথম থেকেই আইন ও সালিস কেন্দ্র ডিল করছে। ওনারা যা বলে আমি তাই করি”।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এসআইজে/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।