অন্যদিকে, রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বাড়ায় পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে যানজট। অলিগলি থেকে রাজপথ সবখানেই পথচলতি মানুষের নাভিশ্বাস।
সোমবার (১৯ জুন) ঢাকার রামপুরার বিটিভি সংলগ্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জলাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে ড্রেইনেজ ব্যবস্থা চালু করার উদ্দেশ্যে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। রাস্তার পাশে পড়ে আছে বড় বড় পাইপ আর খননের পর তোলা মাটি। বৃষ্টিতে মাটিগুলো মূল সড়কের ওপর ভেসে আসায় রাস্তাটি সম্পূর্ণরুপে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাকে দেখলে মনে হয় যেন কাদাময় মাটির রাস্তা।
গত ২৯ মে থেকে শুরু হওয়া রামপুরায় রাস্তা খননের এই কাজটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় করছে কোহিনূর এন্টারপ্রাইজ। মাটি প্রতিদিন রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলার কথা। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক রামপুরা শাখার সামনে থেকে শুরু হওয়া এ কাজে রাস্তার ওপরেই পড়ে থাকতে দেখা যায় খননকৃত মাটি। টেন্ডার অনুসারে কাজটির মেয়াদ আগামী ৬ মাস। কিন্তু পরিস্তিতি বা কাজের ঢিমে-তাল গতি দেখেই আন্দাজ করা যায় আগামী এক বছরেও হয়তো এই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
এমনটাই বলছিলেন টেন্ডারপ্রাপ্ত কোহিনূর এন্টারপ্রাইজের ফোরম্যান লিটন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মেয়াদ ৬ মাস থাকলেও আগামী এক বছরের আগে এ কাজ শেষ করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। বৃষ্টির কারণে আমাদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের শ্রমিকসংখ্যা ৪০ জন। মেয়াদ শেষ হলেও আমরা সময় বাড়িয়ে নিতে পারবো।
এছাড়া রামপুরায় বিটিভির কার্যালয়ের গেটের সামনেই দেখা যায়, মাটি ও ইট ফেলে রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। তাতে গাড়ি চলাচল করতে পারলেও পায়ে চলা মানুষদের ভোগান্তির অন্ত নেই। এ কারণে রিক্সা ভাড়াও বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার মানুষেরা। রিক্সা চালকদের মতে রাস্তার করুণ দশার কারণে প্রতিদিন তাদের রিকশার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে গেছে। এ কারণে বাড়তি ভাড়া হাঁকছেন তারা।
এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী গোলাম মোহাম্মদ বলেন, ভালো কাজের জন্য ধৈর্য ধরতে হয়। এগুলো শহর উন্নয়নমূলক কাজ, আমরাই এর সুফল ভোগ করে ভালো থাকতে পারবো। কিন্তু সময়টা আরও কমানো ও বর্ষাকালে এ ধরণের কাজ পরিহার করা উচিৎ। কেননা এ কাজ চলমান সময়ে ভোগান্তি ধৈর্যের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায়।
এদিকে একই কারণে রামপুরা-বনশ্রী লিংক রোডের রামপুরার সংযোগস্থলে গত একমাস ধরে টানা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আছে। যে কারণে রাস্তার গাড়িগুলো চলছে একটি লেন ধরে। তাই যানজটের তীব্রতায় অতীষ্ট সবাই।
বিটিভি সংলগ্ন চেইনশপ ‘স্বপ্ন’ শাখা-ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের আউটলেটের সামনে এখনো খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয় নি। তবে একদম কাছেই চলে এসেছে। এর আগেও আমরা এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি । সে অভিজ্ঞতা অনুসারে আমরা আমাদের বর্তমান বিক্রির ৫০ ভাগ কমে যাওয়ার আশংকা করছি।
‘স্বপ্ন’ আউটলেটের পাশেই রাজধানী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। কলেজের গেটের সামনেই প্রায় ৬ ফুট গভীর গর্ত ও গর্তের পাশেই খননকৃত মাটির ঢিবি ও বড় বড় সিমেন্টের তৈরি পাইপ। স্কুল কর্তৃপক্ষ পারাপারের জন্য কাঠের তক্তা দিলেও সন্দিহান কলেজে চলমান শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে।
কলেজটির অধ্যক্ষ বললেন, আমরা আসলেই অসহায়। আমরা জানতাম না এখানে খোঁড়াখুঁড়ি হবে। কর্তৃপক্ষের ভালো সিদ্ধান্তগুলো ভালো সময়ে হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
এমএএম/জেএম