ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বেহাল সড়কে ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
বেহাল সড়কে ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ রাজধানীর একটি সড়কে স্থবির যানবাহন

ঢাকা: এক সপ্তাহ পর পবিত্র ঈদ-উল ফিতর। ছুটি এখনও শুরু হয়নি। তবুও প্রিয়জন ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন অনেকেই।

অনেকটা দুর্ভোগে পড়তে হলেও লম্বা লাইনের ভিড়-বাট্টা কাটিয়ে অনেকেই হাতে পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত টিকেট। কিছুটা স্বস্তি নিয়ে রওয়ানা হচ্ছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে।

যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ হয়নি। সামনে পোহাতে হবে অনেক ভোগান্তি।

এদিকে, ঘরমুখো অনেকে যাত্রী এখনও পাননি টিকেট নামের সেই ‘সোনার হরিণ’।

বর্ষার মৌসুম, সারাদেশেই থেমে থেমে পড়ছে বৃষ্টি। এতেই সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে কাদা-পানি আর জলাবদ্ধতা। এছাড়া মহাসড়কের অনেক জায়গাতেই আস্তরণ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে গর্তের, ছোট-বড় অনেক খানা-খন্দের। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এসব খানা-খন্দ মেরামতের কাজও চলছে। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে সড়ক মেরামতের কাজ। সব মিলিয়ে এবার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।
 
হাইওয়ে পুলিশ বলছে, বর্ষার মৌসুমে সড়কগুলো কিছুটা নরম থাকে। এরপর যানবাহনের প্রচন্ড চাপ। জমাট পানিতে এসময় সৃষ্টি হয় খানা-খন্দ। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের বৃষ্টির কারণে এমন খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, কাঁচপুর ও চন্দ্রা দিয়ে উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ গাড়ি বের হয়। কিন্তু সড়কের এই দুটি জায়গার মধ্যে কাঁচপুরের সড়কটি অত্যন্ত সরু। একারণে যানজট এখানে সবসময় লেগেই থাকে। চন্দ্রাতে রাস্তার অবস্থাও খুব খারাপ।

মহাসড়কের কাঁচপুর পয়েন্ট প্রশস্ত করতে, চন্দ্রা পয়েন্টে খানা-খন্দ মেরামতসহ মোট ১২৩টি পয়েন্ট চিহ্নিত করে সড়ক ও জনপদ (সওজ) কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ইতিমধ্যে কাঁচপুর ও চন্দ্রাসহ মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গা মেরামতের কাজ চলছে। এছাড়া এরার ঈদ-উল ‍ফিতরে দেশের প্রায় ২১ হাজার কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার ও দুর্ঘটনা রোধে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। বৃষ্টি ও ভারি বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশের হাইওয়ে বিভাগ।

হাইওয়ে পুলিশের চারটি অঞ্চলের (কুমিল্লা, বগুড়া, মাদারীপুর ও গাজীপুর) মোট ২৮টি স্টেশন (থানা) এবং ৪৪টি ফাঁড়িতে থাকা মোট তিন হাজার সদস্য যানজট নিরসন ও সড়কের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।

চন্দ্রা, বাইপাইল, নবীনগর, কোনাবাড়ি, ভুলতা, কালিয়াকৈর, ভোগরা, কাঞ্চনব্রিজ, কাঁচপুরসহ মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব পয়েন্টের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য থাকছে সিসিটিভি মনিটরিং সেল।

মহাসড়কের পাশে থাকা বাজারগুলো যাতে সড়কের উপর না উঠে আসে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এরই মধ্যে এমন ২৬টি বাজারের ইজারাদারদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এতে যানজট হবে না ও সড়কে যানবাহন চলাচলে বাধা থাকবে না।  

বিকল গাড়ি দ্রুত সরিয়ে নিতে সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশের রেকার।

পুলিশের হাইওয়ে বিভাগের প্রধান উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা যাতে ভোগান্তীতে না পড়েন, যাতে নিরাপদে যেতে পারেন সেজন্য হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগই রয়েছে যথেষ্ট তৎপর। অতিবৃষ্টির কারণে সড়কে গর্ত হলে, আর যদি সেখানে পড়ে গাড়ি নষ্ট হয়, তখনই সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে চালক এবং হাইওয়ে পুলিশের যতটুকু সমস্যা হয় তার থেকে দ্বিগুণ ভোগান্ত্রীতে পড়তে হয় ঈদ যাত্রীদের।

তিনি বলেন, এই সময় মহাসড়কে যাতে কোনো ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে না পারে সেজন্য হাইওয়ে পুলিশ তৎপর থাকবে। রুট পারমিট ছাড়া কোনো গাড়ি রিজার্ভ যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে না।

বর্ষার মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে সড়কে পানি জমে থাকে। তাই ওই রাস্তার সঙ্গে চালক পরিচিত না থাকলে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
এসজেএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।