ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পোড়া কপাল, মহানগরীতে থেকেও সাঁকো পার হই

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
পোড়া কপাল, মহানগরীতে থেকেও সাঁকো পার হই মহানগরীর ভেতরে বাঁশের সাঁকো/ছবি-মানজারুল ইসলাম

খুলনা: প্রায় দুই যুগ ধরে একটা রাস্তার জন্য অপেক্ষা করছি। এলাকাবাসী মিলে কাউন্সিলরকে বলেছি, মেয়রকে বলেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তারা কেবল নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। যে কারণে যাতায়াতের সুবিধার জন্য এলাকার সবাই মিলেমিশে ৩০০ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০টি পরিবারের সদস্যদের।

আমাদের পোড়া কপাল মহানগরীর ভেতরে থেকেও সাঁকো পার হই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়ার ভাই ভাই গলির বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, রাস্তা হয়নি বলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা।

সম্প্রতি সময়ে সাঁকোটিও ভেঙে পড়েছে। বাচ্চাদের ঘাড়ে করে স্কুলে নিতে হচ্ছে। শুক্রবার (১৬ জুন) সাঁকোটি মেরামত করতে গিয়ে একটি ছেলের পা কেটে ৭টি সেলাই দেওয়া লেগেছে।

মহানগরীর ভেতরে বাঁশের সাঁকো/ছবি-মানজারুল ইসলাম
ওই গলির প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল খালেক মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, নিচু এলাকা হওয়ায় বারো মাসই এ গলির শেষ মাথায় পানি জমে থাকে। যে কারণে সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল। দীর্ঘ দুই যুগেও সেই সাঁকোর স্থানে সড়ক হয়নি। মানুষ জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়েই আসা-যাওয়া করছেন।

তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন বৃদ্ধ ও স্কুলগামী শিশুরা। বছরের পর বছর সিটি করপোরেশনের কাছে আবেদন করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা।

এ গলির বাসিন্দারা তাদের দুঃখের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, এলাকাবাসী চাঁদা তুলেই ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে আসছে বছরের পর বছর ধরে। শীত মৌসুমে সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে সাঁকো ব্যবহারে থাকে মারাত্মক ঝুঁকি। রাস্তা না থাকায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী, মুমূর্ষু রোগী ও গর্ভবতী নারীদের চরম দুর্ভোগ পড়তে হয়।
মহানগরীর ভেতরে বাঁশের সাঁকো/ছবি-মানজারুল ইসলামশনিবার (১৭ জুন) দুপুরে সরেজমিনে মোল্লাপাড়া মেইন রোড দিয়ে ভাই ভাই গলির সাঁকো অংশে পা রাখলেই মনে হচ্ছে কোনো অজপাড়াগাঁ। সব সময় পানি জমে থাকায় ময়লা-আবর্জনা পরে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সাঁকোর কিছু অংশ ভাঙা থাকায় কয়েকজন নারী ও শিশু পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।

খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল বলেন, বরাদ্দের অভাবে মোল্লাপাড়ার ভাই ভাই গলির সাঁকোর স্থানে রাস্তা করা যাচ্ছে না। তারপরও এলাকার মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে প্রজেক্ট প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। বরাদ্দ হলেই সড়কের কাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা,  জুন ১৭, ২০১৭
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।