ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গাড়ি কারসাজিতে শোকজ, কারাবাস হতে পারে প্রিন্স মুসার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
গাড়ি কারসাজিতে শোকজ, কারাবাস হতে পারে প্রিন্স মুসার প্রিন্স মুসা

ঢাকা: কথিত ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের ব্যবহৃত গাড়িটি কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না  এবং তার বিরুদ্ধে কেন মামলা দায়ের করা হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কাস্টমস। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এই কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।  

কাস্টমসের একটি নির্ভরশীল সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
 
সূত্র জানায়, গত মাসে মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে শুল্ক গোয়েন্দা।

বিচারের জন্য বিষয়টি অবহিত করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মুসার ব্যবহৃত গাড়িটি কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না কিংবা কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে একটি নোটিশ দিয়েছে। নোটিশের উত্তর না পেলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মুসার ব্যবহৃত গাড়িটি বাজেয়াপ্ত ও অর্থদণ্ড করবে। মামলা করবে মানি লন্ডারিং আইনে। এতে কথিত এই ধনকুবেরকে কারাগারেও যেতে হতে পারে।
 
অন্যদিকে ধনকুবের মুসার বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভার গাড়িতে শুল্ক ফাঁকি সংক্রান্ত দুর্নীতি সংঘটিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার ( ৮ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা।

এ বিষয়ে দুদক সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা থেকে সুপারিশকৃত একটি চিঠি পাওয়া গেছে। যেখানে মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দার সুপারিশকৃত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মুসার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করবে দুদক। ওই তদন্তে মুসার ব্যবহৃত গাড়িতে কোনো ধরনের মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য খুঁজে পেলে মামলা ঠুকবে দুদকও।

উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল প্রিন্স মুসার ব্যবহৃত ‘রেঞ্জ রোভার ভোগ’ মডেলের গাড়ি আটক করে। গাড়িটি ভোলা বিআরটিএ থেকে শুল্ক পরিশোধের ভূয়া বিল অব এন্ট্রি দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। উপরন্তু গাড়িটির রং নিয়েও তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।

আমদানিকালে গাড়িটির রং ছিলো সিলভার। রেজিস্ট্রেশনকালে পাওয়া গেছে সাদা রং। আর আটককালে দেখা গেছে, গাড়িটির রং কালো। শুল্ক গোয়েন্দার চোখ ফাঁকি দিতে গাড়িটির রং বারবার পাল্টানো হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এছাড়া সুইচ ব্যাংকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা আটকে থাকার যে তথ্য তিনি শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে দিয়েছেন তারও কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। ফলে শুল্ক গোয়েন্দা মুসার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার জন্য এনবিআরে সুপারিশ করেছে। এ মামলায়  অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন ৪ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছরের সাজা হতে পারে মুসার।

এ বিষয়ে এর আগে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলানিউজকে জানান, সরকারের প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা কর ফাঁকিতে জড়িত প্রিন্স  মুসা। ভোলা বিআরটিএ এর কর্মকর্তার যোগসাজসে তিনি এই দুর্নীতি করেছেন। এছাড়া গাড়িটি কারনেট ডি প্যাসেজ সুবিধায় ২০১০ সালে শুল্কমুক্তভাবে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই প্রযোজ্য শুল্ক-করাদি পরিশোধ ব্যতিরেকে এটি বাংলাদেশে ব্যবহার, এমনকি রেজিস্ট্রেশনেরই সুযোগ নেই।
 
শুধু তাই নয়, গত ৭ মে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে জবানবন্দি দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদকর্মীদের মুসা বলেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি। কোনো ট্যাক্স ফাঁকি দেইনি। আমার ব্যবহৃত গাড়িটির বৈধ কাগজপত্র শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে জমা দিয়েছি। গাড়িটি আমি ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
এসজে/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।