সোমবার ( ২৯ মে) দুপুরে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় দুদকের উপপরিচালক শেখ আবদুস ছালাম বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বলে দুদকের নির্ভরশীল একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে। এর আগে রোববার লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধেও মামলা করে দুদক।
দুদকের নির্ভরশীল সূত্রে জানা যায়, আইএফআইসি ব্যাংক লি. এর সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বাদলের স্ত্রী সোমা আলম রহমান গত বছরের ৭ আগস্ট কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করেছেন।
এছাড়া ৯২ কোটি ৮২ লাখ ৮২ হাজার ৩৭২ টাকা ৬৫ পয়সা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। শুধু তাই নয়, এই সম্পদ তিনি জোর কের ভোগ-দখল করে খাচ্ছেন যা দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক) আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কক্সবাজারের ইনানী জালিয়া পালংয়ে ৩২ দশমিক ৯৯ শতক, ৩০ শতক, ২৯.৫৬ শতক, ৩১ দশমিক ১৬ শতক, ১.২ একর জমি ক্রয় করেছেন। যার দলিল মূল্য (১৯ লাখ + ১৮ লাখ৭৫ হাজার + ২৩ লাখ + ২৪ লাখ ১০ হাজার + ১ কোটি ৪২ লাখ ৫ হাজার) মোট ২ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ তিনি দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ঘোষণা না করে অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করেছেন।
শুধু তাই নয়, তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ পাওয়া গেছে ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৪৩ হাজার ২২২ টাকার আর এবং অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ১৩২ কোটি ৭৬ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭৫ টাকা ৫৩ পয়সা। এছাড়া সোমা আলম রহমান আয়কর পরিশোধ করেছেন ৪০ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩৬ টাকা। পারিবারিক খরচ (স্বামীকে উপহার প্রদানসহ) করেছেন ১০ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার ৮৮২ টাকা।
এক্ষেত্রে আয়কর পরিশোধ, পারিবারিক খরচসহ মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ পাওয়া গেছে ১৪৮ কোটি ৮৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৫ টাকা ৫৩ পয়সা। অপরপক্ষে যাচাইকালে তার আয়ের উৎসের পরিমাণ পাওয়া গেছে ১০ কোটি ৮০ লাখ ৯৮ হাজার ৩৮ টাকা। দায়-দেনার পরিমাণ পাওয়া গেছে ৪৫ কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার ৪ টাকা ৮৮ পয়সা। এ ক্ষেত্রে দায়-দেনাসহ তার মোট উৎসের পরিমাণ পাওয়া গেছে (১০,৮০,৯৮,০৩৮ + ৪৫,২১,০৭,০০৪/৮৮) সমান ৫৬ কোটি ২ লাখ ৫ হাজার ৪২ টাকা ৮৮ পয়সা। ফলে সোমা আলম রহমানের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় গেছে ৯২ কোটি ৮২ লাখ ৮২ হাজার ৩৭২ টাকা ৬৫ পয়সা। যা তিনি ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ বিষয়ে দুদক সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, লুৎফর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় গতকাল তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে কমিশন। অপরদিকে আজ কমিশনে তদন্ত কর্মকর্তা শেখ আবদুস ছালাম মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বাদলের স্ত্রী সোমা আলম রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য দাখিল করে মামলা করার অনুমতি চান। এরপর কমিশন তার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দিয়েছে। মনে রাখবেন, দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতেই হবে সে যেই হোক না কেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, মে ২৯,২০১৭
এসজে/এমজেএফ