রোববার (২৮ মে) দুপুরে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মুহা. রাকিবুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রীর প্রেমিক কালাম হাওলাদার বরিশাল সদর উপজেলার টুমচর এলকার চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন কাঞ্চন হাওলাদারের ছেলে, স্ত্রী মমতাজ বেগম একই এলাকার বারেক সরদারের মেয়ে।
এছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রাজিব রাঢ়ী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কালাম হাওলাদারের ভায়রা রাজার চর এলাকার কামাল হোসেন রাঢ়ীর ছেলে।
আদালতের বেঞ্চসহকারী মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, টুমচর এলাকার বাসিন্দা জেলে স্বরুব আলী মৃধার স্ত্রী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মমতাজ বেগম তাদের সংসারে তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে বিভিন্ন স্থানে গান-বাজনা করে বেড়াতেন। এ কাজে মমতাজ বেগম স্থানীয় বাসিন্দা কালাম হাওলাদারের ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করায় এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
যা স্বামী স্বরুব আলী মৃধার চোখে ধরা পরলে স্ত্রী মমতাজকে বাড়ির বাইরে গিয়ে গান-বাজনা না করার জন্য বলেন। কিন্তু তার কথা অমান্য করে গান-বাজনা করার নামে কালামের সঙ্গে পরকীয়া করে ২/৩ দিন পর বাড়ি ফিরতেন।
২০১৫ সালের ১১ মার্চ সন্ধ্যায় ৩ দিন পর প্রেমিক কালামকে নিয়ে বাড়ি ফেরে স্ত্রী মমতাজ। এ নিয়ে স্বামী স্বরুব আলীর সঙ্গে ঝগড়া হয় মমতাজের। ওইদিন রাতে প্রেমিক কালাম ও কালামের ভায়রা ছেলে রাজিবকে নিয়ে স্বামী স্বরুবকে হত্যার পরিকল্পনা করে মমতাজ।
রাতে ঘুমানোর পর স্ত্রী মমতাজ ও তার প্রেমিক কালাম মিলে স্বরুব আলীর গলায় রশি বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে তার মরদেহটি তুলে নিয়ে পাশের চতলখালী খালের পারে পুঁতে রাখা হয়।
ওই রাতেই স্বরুবকে খুঁজতে যায় তার ভাই আশ্রাব আলী মৃধা। ভাইকে বসতঘরে না পেয়ে খুঁজতে থাকে তিনি। কিছুক্ষণ পরই আশ্রাব স্থানীয়দের সহযোগিতায় তার ভাইয়ের পায়ের জুতাসহ মরদেহ পায় খালের পাশে ওই অবস্থায়। পরে কাঁদাযুক্ত মরদেহ ধুয়ে সকলেই দেখতে পায় গলায় গোলাকার চিহ্ন।
পরে থানা পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরবর্তীতে ময়না তদন্ত রিপোর্টেও স্বরুবকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে।
এ ঘটনায় থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন ভাই আশ্রাব আলী মৃধা।
একই বছরের ২৬ মে তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার এসআই হেমায়েল কবির।
আদালতে ২০ জনের মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
এমএস/এএটি/বিএস