ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় ইফতারি রসনায় সেরা ‘নানার হালিম’

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
খুলনায় ইফতারি রসনায় সেরা ‘নানার হালিম’ খুলনায় ইফতারি রসনায় সেরা ‘নানার হালিম’- ছবি- মানজারুল ইসলাম

খুলনা: অবাক করা দৃশ্য। দরদামের বালাই নেই, বিক্রির জন্য চিৎকার-চেঁচামেচিরও প্রয়োজন নেই। মানুষ লাইন ধরে কিনছে। ক্রেতারা টাকা দিচ্ছে, বিক্রেতারা সঙ্গে সঙ্গে ডেকচি থেকে মাটির পাত্রে তুলে দিচ্ছে। 

রোববার (১৮ মে) প্রথম রমজানের বিকেলে নানার হালিমের দোকানে এ দৃশ্যের দেখা মেলে। মহানগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনের ‘নানার হালিম’ খুলনার বিখ্যাত ইফতার আইটেম।

 

নানার হালিমের মালিকের নাম মো. হজরত আলী (৭৩)। তার এ নাম প্রায় হারিয়েই গেছে ‘নানা’ নামের আড়ালে। সবাই তাকে ডাকে নানা নামে।  

ইফতারিতে মিষ্টি জাতীয় খাবারের পাশাপাশি ঝাল খাবার হিসেবে নানার হালিমের জুড়ি নেই বলে প্রতিবারের মতো এবারও খুলনার বিখ্যাত নানার হালিমের দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
 
ইফতার আয়োজনে নানার হালিম না থাকলে যেন পূর্ণতা হয় না। সেজন্য প্রতিবারের মতো এবারও প্রথম রমজানে হালিম কিনতে এসেছেন বলে জানান ইনসান উদ্দিন।

শহরে নামি-দামি হোটেল রেস্টুরেন্টে হালিম থাকার পরও কেন এখানে এসেছেন? জানতে চাইলে ক্রেতা আব্দুল্লাহ বলেন, রান্নার কলাকৌশল ও বৈচিত্র্যময় নামের কারণে নানার হালিম বেশ জনপ্রিয়। এর স্বাদও আলাদা। এক কথায় নানার হালিমের জুড়ি নেই। ইফতারির আয়োজনে রয়েছে অন্য আইটেমও১৯৯৩ সাল থেকে দুই যুগ ধরে এখানে হালিম বিক্রি করছেন মো. হজরত আলী। নামে তাকে কেউ না চিনলেও সবাই তাকে নানা হিসেবে চেনেন।  

তিনি বলেন, রোজাদারদের তৃপ্ত করতে ২৪ বছর ধরে হালিম তৈরি করি। হয়তো এ কারণেই মানুষের কাছে আমার হালিম প্রিয়।
 
হালিমের নাম নানার হালিম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই নানা নামে ডাকতে ডাকতে হালিমের নামও নানার হালিম হয়ে গেছে।  

প্রথম রমজানে কত ড্যাগ তৈরি করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বড় ৬ ড্যাগ হালিম তৈরি করা হয়েছে। সাড়ে ৩টার মধ্যে ১ ড্যাগ শেষ হয়ে গেছে। মাটির সানকিতে ১০০ টাকা, ২০০ টাকা, ৩০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও ৮০০ টাকা দাম এ হালিমের। তার এ হালিম তৈরিতে ১০ জন কর্মচারী কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
  
এদিকে মৌসুমী বিক্রেতারা মহানগরীর পিটিআই মোড়, রয়্যালের মোড়, শিববাড়ি মোড়, ফেরিঘাট মোড়, নিউ মার্কেট এলাকা, ময়লাপোতা মোড়, রূপসা ফেরিঘাট, ডাকবাংলো মোড়, হেলাতলা মোড়, বড় বাজার এলাকা, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, খালিশপুর এলাকা ও দৌলতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুপুরের পর থেকেই ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেছেন। পাড়া-মহল্লার হোটেল এবং ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও ইফতার বিক্রি হচ্ছে। এসব জায়গায় বিক্রি হওয়া ইফতার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজু, ছোলা, বেগুনি, আলু ও ডিম চপ, পাকোড়া, সবজির চপ, ফুলুরি, ফিরনি, পিঠা, শাহী জিলাপি।  

এছাড়া মহানগরীর হোটেল রয়্যাল, ক্যাসল সালাস, ইউ হাংরি, কেওড়া, মাগুরা রেস্টুরেন্টসহ অভিজাত হোটেলগুলোতে মধ্যবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য বিভিন্ন দামের ইফতার প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।