ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লাউয়াছড়ায় গাড়ি চাপায় প্রাণ গেলো বাঘ-বানরের 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
লাউয়াছড়ায় গাড়ি চাপায় প্রাণ গেলো বাঘ-বানরের  নিথর মেছো বাঘ-ছবি-বাংলানিউজ

লাউয়াছড়া (মৌলভীবাজার) থেকে: মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়ায় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেলো একটি মেছো বাঘ ও বানরের। 

রোববার (২৮ মে) লাউয়াছড়া উদ্যানের মাগুরাছড়া সংলগ্ন শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কে প্রাণী দু’টির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।  

খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় বন বিভাগের কর্মীরা মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।

 

স্থানীয়রা জানান, রাস্তা পারাপারের সময় প্রাণী দুটিকে চাপা দেয় অজ্ঞাত যানবাহন।  

লাউয়াছড়া বনের ভেতরের সড়কে প্রায়ই প্রাণ দিতে হচ্ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীদের। যানবাহনের ‍চাকায় পিষ্ট হয়ে শত শত দুর্লভ প্রাণীর জীবনাবসান হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। বেশিরভাগই থ‍াকছে অজানা।

স্থানীয়রা এর প্রধান কারণ হিসেবে মনে করছেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলমান শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়ক। প্রাণীদের রক্ষায় সড়কটিতে গাড়ির গতি কমিয়ে ২০ কিলোমিটার অনুমোদন করা হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এখানে এসে ফাঁকা পেয়ে গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন চালকরা। আর এতেই প্রাণ হারাচ্ছে অনেক দুর্ভল প্রাণী।

বন বিভাগ বলছে, রাতে বেশিরভাগ প্রাণী চলাচল করে। অনেক সময় বুঝে ওঠার আগে দ্রুতগামী যানবাহনের চাকায় তারা পিষ্ট হচ্ছে। অন্তত রাতের বেলা যানবাহন চলাচল বন্ধ করা গেলে কিছুটা রক্ষা হয়। সড়কটি বাইপাস করে দেওয়ার দাবি তাদের দীর্ঘদিনের। কিন্তু সেই দাবিও উপেক্ষিত।

লাউয়াছড়া উদ্যানের সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, লাউয়াছড়া উদ্যানের ভেতর দিয়ে দ্রুত গতিতে যানবাহন চলাচল করে। প্রায় সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রাণিরা মারা যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে হুমকির মুখে পড়বে লাউয়াছড়ার বন্যপ্রাণিরা। তাদের রক্ষায় বিকল্প চলাচলের রাস্তা হিসেবে বাইপাস সড়ক দাবি করেছে বন বিভাগ।  

বন বিভাগ সূত্র জানায়, বাইপাস সড়কটি নুরজাহান চা বাগানের পাশ দিয়ে বের হয়ে ফুলবাড়ী চা বাগান এলাকায় গিয়ে আবার মূল সড়কের সঙ্গে মিশে যাবে। রাতের বেলা বনের ভেতরের সড়কটি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। তখন বাইপাস সড়ক দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন।  

তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে আরও বলেন, বনের ভেতর দিয়ে  সরাসরি গেলে দূরত্ব পড়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার। আর বাইপাস দিয়ে গেলে পাড়ি দিতে হবে ৯ কিলোমিটারের মতো। অর্থাৎ শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জ যেতে হলে যানবাহনগুলো বাড়তি পথ ঘুরতে হবে মাত্র আড়াই কিলোমিটার।  

বাইপাস সড়কটি ৪ কিলোমিটার পাকা। অবশিষ্ট পথ পাকা করলেই বাইপাস উন্মুক্ত করা সম্ভব। লাউয়াছড়ায় অগ্নিকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত পথটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত রয়েছে। একটু সংস্কার করলেই চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব।

অথচ এই সামান্য উদ্যোগের অভাবে প্রতিনিয়ত উজাড় হয়ে হচ্ছে লাউয়াছড়ার জীববৈচিত্র্য। আগে যেখানে পা বাড়ালেই মিলত নানান জাতের প্রাণীর দেখা। এখন সেখানে কয়েক কিলোমিটার ঘুরেও নিরাশ হতে হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
এনইউ/আরআর/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।