সাঁইত্রিশ বছরে আয় বেড়েছে বহুগুণ। আয়ের এই পরিসংখ্যানে তার দারুণ প্রশান্তিতে থাকার কথা।
দুলাল ঋষির মতে, জুতার মার্কেট নব্বুই ভাগই চলে গেছে বার্মিজ জুতার দখলে। দেশের ভেতরেই এখন অনেক কারখানায় জুতা তৈরি করে বার্মিজ বলে চালানো হচ্ছে। তাই তাদের আয়-রোজগার যাচ্ছে কমে। তার দেওয়া পরিসংখ্যানের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতেই আশপাশের কয়েকজনের দিকে ঈঙ্গিত করলেন।
কাকতালীয়ভাবে আশপাশের জনা সাতেক লোকের মধ্যে ১ জনের পায়েই কেবল দেখা গেল চামড়ার জুতা। আর বাকি ৬ জনের পায়ে বার্মিজ জুতা। বার্মিজ জুতা ছিঁড়ে গেলে তাদের কাছে নিয়ে আসা হয় সেলাই করার জন্য। কিন্তু চামড়ার জুতা সপ্তাহান্তে আসে কালি করার জন্য।
বার্মিজ জুতার কারণে উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা, চোখের নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চামড়ার জুতার ব্যবহার করলে এই সমস্যা থাকতো না বলে ডাক্তারের বরাত দিয়ে জানান রঞ্জু ঋষি।
‘আপনার আয় বাড়ানোর জন্য এ কথা বললেন নাতো?’-- এমন প্রশ্নের জবাবে রঞ্জু ঋষি বললেন, ‘আপনি নিজেই দিনকয় পরীক্ষা করে দেখেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন। ’
স্থানীয়দের কাছে ঋষি নামেই পরিচিত এই মুচির জন্মস্থান হবিগঞ্জ সদর উপজেলায়। দু’পয়সা বাড়তি রোজগারের জন্য পাড়ি জমান মৌলভীবাজারে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থাকেন প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাতে। আর দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসেন চৌরাস্তায় মোড়ে। আয় হয় ৩’শ থেকে ৬’শ টাকা পর্যন্ত। এই টাকা দিয়ে তার সংসার ভালোই চলার কথা। কিন্তু সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা শিখিয়ে সরকারি চাকরি ধরাতে চান। বড় ছেলে বৃন্দাবন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে, মেজ ছেলে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে, ছোট মেয়ে গোঁসাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে সব দু:খ বুক পেতে নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
এসআই/ জেএম