ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ববি’র শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে আহত ১৫

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
ববি’র শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে আহত ১৫ ববি’র শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে আহত ১৫

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ঢালে চরআইচা ও কর্ণকাঠী এলাকার বেশকিছু বসতঘর ও প্রায় অর্ধশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেন।

শুক্রবার (২৬ মে) রাত ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আল আমিন জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তিনি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর নিচে বাজারের একটি দোকানে বসে নাস্তা করছিলেন। এসময় স্থানীয় জয়, বাপ্পি এবং আশিকসহ কয়েকজন বখাটে তাদের ওই দোকানের সামনে থেকে সরে অন্য কোথাও গিয়ে বসতে বলেন। সরে যেতে বলার কারণ জানতে চাইলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা গিয়ে লোকজন নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালান।  

এতে আল আমিন, গণিত বিভাগের সিফাত আহমেদ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সজিব মিয়া, ফিন্যান্স বিভাগের রিফাত, আইন বিভাগের রানা, নাঈম উদ্দিন মিঠু, মার্কেটিং বিভাগের সাকিব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুর রহমান এবং মিরাজ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের সহপাঠীদের মারধর করার পর স্থানীয় বখাটেরা ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। এসময় সহপাঠীদের মারধরের খবর শুনে ছাত্রাবাসগুলোর সব শিক্ষার্থী রাস্তায় বেরিয়ে বহিরাগতদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যান।  

এদিকে, স্থানীয় বখাটেদের হামলায় আহত আট-১০ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়।  

শিক্ষার্থীরা জানান, হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

তবে স্থানীয় সেলিম, রাজিয়া, কামরুলসহ ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, সুরুজ মোল্লা নামে এক বয়ষ্ক ব্যক্তির সামনে বসে বিশ্ববিদ্যালয়েন শিক্ষার্থীরা ধুমপান করায় জয় নামে এক যুবক তাদের নিষেধ করেন। এনিয়ে শিক্ষার্থীরা জয়কে মারধরও করেন। পরে স্থানীয়রা মীমাংসা করিয়ে দিলেও কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী এসে চরআইচা ও কর্ণকাঠী এলাকার ওই বাজারটি’র অর্ধশত দোকান, বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য লিটনের কার্যালয়েও ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের হামলায় স্থানীয় পাঁচ-সাতজন আহত হন।

এদিকে, খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতা মো. কাইয়ুম উদ্দিন ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়।

পরে শিক্ষার্থীরা বরিশাল-পটুয়াখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে কিছুক্ষণ যান চলাচলও বন্ধ থাকে। তবে শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে অল্পসময়েই বিক্ষোভ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। সড়কে বিক্ষোভের সময় কিছু যানবাহনে ভাঙচুর করারও অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. কাইয়ুম উদ্দিন জানান, তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
 
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল্লাহ মো. নাসির বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৭ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
এমএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।