ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১২ হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে মেঘনার পানি বিপদ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুই ইউনিয়নের সাত গ্রাম তলিয়ে গেছে।
অমাবশ্যায় সৃষ্ট জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
স্থানীয়রা জানান, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনার চর, দাসেরহাট ও চর যতিন এবং মনপুরা ইউনিয়নের কাইয়ারটেক, ঈশ্বরগঞ্জ, কুলাগাজীর তালুক ও আন্দির পাড় গ্রাম। এসব এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর ও ফসলের ক্ষেতসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে গেছে।
পানিবন্দি মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জোয়ারের পানির হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু ঘরে পানি ঢুকে খাদ্যশস্যসহ অনেক মালপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। পানির কারণে গৃহপালিত পশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। পানিতে ভেসে গেছে অনেক পুকুরের লাখ লাখ টাকার মাছ।
হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের বিশেষ করে সোনার চর ও চর যতিন এলাকার পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁধ মেরামত করতে বলা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমানত উল্লাহ আলমগীর বলেন, জোয়ারের পানিতে ইউনিয়নের সাত হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে অন্তত ৬০টি পুকুরের ১০ লাখ টাকার মাছ। পাউবো দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাওয়ার হোসেন বলেন, মনপুরার দু’টি ইউনিয়ন মনপুরা ও হাজিরহাটের সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে। তবে আমরা জরুরি ভিত্তিতে এক কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ মেরামত কাজ করছি।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ জোয়ার হয়। সাধারণত মেঘনায় পানির স্বাভাবিক উচ্চতা থাকে ২২০ সেন্টিমিটার কিন্তু তা বেড়ে হয়েছে ৩২০ মিটার। অর্থাৎ বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার বেশি। এ মৌসুমে এর আগে এমন জোয়ার হয়নি।
মনপুরা উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা গোপীনাথ বলেন, বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে দু’টি ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের রবিশস্য ডুবে গেছে। তাই এসব এলাকায় নতুন করে রবিশস্য আবাদ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
এসআই