ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কেন যাবেন এক্সেলসিওরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
কেন যাবেন এক্সেলসিওরে প্রাকৃতিক পরিবেশে রিসোর্ট এক্সেলসিওর-ছবি-বাংলানিউজ

সিলেট: কোকিলের কুহু কুহু সুর আর পাখির কিচির-মিচির শব্দে শুরু হয় সকাল। মিষ্টি বাতাস ছুঁয়ে যায় মুখখানি। সবুজ ঝাউ গাছের চিরল পাতার ফাঁকে যেনো ইশারা দেয় সূর্যের কিরণ। উঁচু-নিচু টিলার ভাঁজে ভাঁজে হাঁটতে গিয়ে দেখা মেলে বানরসহ বন্যপ্রাণীদের খুনসুটি। বুনো ফুলের স্পর্শ মেলে হাত বাড়ালেই।  

যান্ত্রিক নগরজীবনের একঘেয়েমি দূর করতে অনেকেই আসেন সিলেটের অভিজাত রিসোর্ট এক্সেলসিওরে। নগরীর উপকন্ঠ সদর উপজেলার খাদিমনগর দলইপাড়া গ্রামের নির্জন পরিবেশে এই রিসোর্ট।

অভিজাত শব্দটি জুড়ে দেওয়া হলেও বিনোদনের জন্য এখানে প্রবেশাধিকার রয়েছে সব শ্রেণীর মানুষের। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের মিতালী করিয়ে দিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন প্রবাসী সাঈদ চৌধুরী ও তার কয়েকজন বন্ধু।  

পাঁচ তারকা হোটেলে বিনিয়োগ না করে প্রাকৃতিক নান্দনিকতার পরশ দিতে করেছেন অভিজাত রিসোর্ট এক্সেলসিওর। প্রতিদিন এখানে গাছপালা ও পশুপাখি প্রেমী শতশত লোক নিজেদের সমর্পণ করেন প্রকৃতির কাছে।  

প্রাকৃতিক পরিবেশে রিসোর্ট এক্সেলসিওর-ছবি-বাংলানিউজএক্সেলসিওরে প্রতি শুক্রবারে ‘নান্দনিক হলি ডে উৎসব’ পালন হয়।  সপ্তাহে একদিন এই উৎসবে আগন্তকদের জন্য ঘুড়ি উৎসব ও লেকের জলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আয়োজন করেন রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। সেই মাছ দিয়ে রাতে বিনোদন মঞ্চ বাঘের টিলায় হয় বারবিকিউ উৎসব। বারবিকিউ পার্টিতে অংশগ্রহণকারীরা একটু ভয়ও পেতে পারেন- কেননা আপনার পাশেই ডেকে উঠবে শিয়াল।   

মন মাতানো বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে রয়েছে-  টিলার পাদদেশে দিনে ও রাতের আলোয় ফুটবল ও হা-ডু-ডু, টেবিল টেনিস খেলার আয়োজন। খেলাধুলা শেষে পরিশ্রান্ত দেহখানি নিয়ে ঝাঁপ দিতে পারেন সুইমিং পুলে। এরপর সঙ্গীদের নিয়ে রাতের অন্ধকারে বাতির আবছা আলোয় ঘুরে বেড়াতে পারেন পাহাড়ের পাদদেশে। এতে বিভিন্ন পশুপাখির ডাক আপনার মনে ভিন্ন মাত্রার যোগান দেবে। এমনটি জানালেন রিসোর্টের প্রধান বিক্রয় ও বিপণন কর্মকর্তা মো. ওসমান গণি।  

তিনি বলেন, রিসোর্টে বুকিং নেওয়া মেহমানদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা পার্টিরও আয়োজন করি। প্রকৃতির মাঝে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক এই রিসোর্টে সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের জন্য রয়েছে পৃথক হলরুম। রাত যাপনের জন্য রয়েছে দু’টি কটেজ-মধুমালতি ও ক্যামেলিয়া।     

আছে বারবিকিউ পার্টির আয়োজন-ছবি-বাংলানিউজসম্প্রতি ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (টোয়াব) ৩০ সদস্য ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা এসেছিলেন হলিডেতে। রাতযাপন করে তারা অংশ নেন ঘুড়ি উৎসবে, মাছ ধরা, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ইভেন্টে।  

নগরীর উপকণ্ঠে সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ধলইপাড়া গ্রাম। গ্রামের প্রকৃতির সামঞ্জস্যে গড়ে ওঠা এক্সেলসিওরের গেট অতিক্রম করতেই চোখ ফেরাতে দেয় না সুন্দরী পাতা বাহার। হাতের বাম পাশে ব্যতিক্রমী অভ্যর্থনা কক্ষ আর ডানে ক্যান্টিন থাকলেও উঁচু গন্তব্যে ওঠা রাস্তার দু’পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষরাজি, বাম পাশে স্বচ্ছ পানির লেক, সবুজ গাছপালা প্রকৃতিকে করে তুলেছে আরও নান্দনিক।  

২০০৪ সালে জেসটেট হলিডে রিসোর্ট ‘জাকারিয়া সিটি’ যাত্রার পর মানুষ আসতে শুরু করে এখানে। উদ্যোক্তাদের এমন ভিন্ন স্থান তৈরির পেছনে একটাই উদ্দেশ্য-মানুষকে প্রকৃতির কাছে নিয়ে আসা।  

ঘুুড়িতে মেতেছেন পর্যটকরা-ছবি-বাংলানিউজ২০১৩ সালে জাকারিয়া সিটির মালিকানা কিনে নেন সাঈদ চৌধুরী ও তার বন্ধুরা। মালিকানা হাত বদলের পর ‘এক্সেলসিওর সিলেট’ নামকরণ হলেও বদলায়নি তাদের উদ্দেশ্য। প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখে আরও নান্দনিক করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন-এমন সহজ স্বীকারোক্তি সাঈদ চৌধুরীর।  

যেভাবে যাবেন: সিলেট শহর থেকে তামাবিল সড়কে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে খাদিমনগরে সুরমা গেট হয়ে ধলইপাড়া গ্রামে এক্সেলসিওর। নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, বন্দর, ধোদীঘিরপাড় অথবা টিলাগড় সিএনজি অটোরিকশাযোগে সুরমা গেট হয়ে এক্সেলসিওরে পৌঁছতে ভাড়া নেবে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা। এক্সেলসিওরের পাশাপাশি যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন পাশেই থাকা শাহপরান ও শাহ সুন্দরের মাজার কিংবা হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র। ঘুরে আসতে পারেন জৈন্তাপুর রাজবাড়ি কিংবা জাফলং।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
এনইউ/আরআর/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।