ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আত্মসমর্পণের পর শিক্ষক শ্যামল কান্তি কারাগারে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
আত্মসমর্পণের পর শিক্ষক শ্যামল কান্তি কারাগারে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে আদালতের নিদের্শে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ- ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: আত্মসমর্পণের পর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যান্দি পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৪ মে) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে হাজির হন শ্যামল কান্তি। আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান তিনি।

বিকেল সাড়ে ৪টায় শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে দুপুরে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভনে স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার মামলায় পুলিশের দেওয়া চার্জশিট আমলে নিয়ে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন একই আদালত।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) হারুনুর রশিদ গত ১৭ এপ্রিল শ্যামল কান্তি ভক্তকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করেন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সোহেল আলম বাংলানিউজকে জানান, শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বিকেলে তিনি একই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

শ্যামল কান্তির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন- ছবি: বাংলানিউজ

শ্যামল কান্তির আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বাংলানিউজকে বলেন, শ্যামল কান্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাছাড়া তিনি একজন শিক্ষক। এসব দিক বিবেচনায় তিনি আদালতে জামিন প্রার্থনা করলেও আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। আগামী ১৩ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

আদালত প্রাঙ্গণে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বাংলানিউজকে বলেন, ‘একটি প্রভাবশালী মহলকে খুশি করতে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে রিপোর্ট দিয়েছে। কারণ, মামলায় যে তারিখ দেওয়া হয়েছিল, তখন স্কুলে ছুটি চলছিল। ছুটির দিনে আমি কেন স্কুলে যাবো আর কেনই বা আমাকে ঘুষ দেবে। মূলত, আমি চক্রান্তের শিকার। প্রভাবশালীরা খুবই তৎপর। তাদের কারণেই আমাকে ভুগতে হচ্ছে। মার খেলাম, আবার এখন মিথ্যে মামলাও খেলাম’।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, মামলাটিতে (১১২/১৬) শিক্ষক মোর্শেদা বেগম অভিযোগ করেন, তাকে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত দুই দফায় এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে এমপিওভুক্ত করতে তিনি কোনো সহায়তা করেননি।

গত বছরের ১৪ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থী রিফাতকে মারধর ও শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পৃথক তিনজন বাদী নারায়ণগঞ্জ আদালতে তিনটি মামলার আবেদন করেন। আদালত ওই দিন বিকেলে শুনানি শেষে প্রথম দু’টি মামলা খারিজ করে দেন। বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমকে প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

গত বছরের ১৩ মে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে মারধর ও পরে কান ধরে উঠ-বস করানো হলে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

** শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
জিপি/আরআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।