ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মদের বিষয়ে কিছুই জানে না ‘রেইনট্রি’ ম্যানেজমেন্ট!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
মদের বিষয়ে কিছুই জানে না ‘রেইনট্রি’ ম্যানেজমেন্ট! রেইনট্রি হোটেলের এমডিকে জিজ্ঞাসাবাদ

ঢাকা: রেইনট্রি হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া মদের বিষয়ে হোটেলের ম্যানেজমেন্ট কিছুই জানে না বলে দাবি করেছে বনানীর রেইনট্রি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মো. আদনান হারুন।

মঙ্গলবার (২৩ মে) বেলা ১১টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দার তলবে কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে হাজির হন আদনান হারুন।
সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নুরুল হুদা আজাদ, যুগ্ম পরিচালক শফিউর রহমান।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আদনান হারুন বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে উদ্ধারকৃত মদ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। এটা নিতান্তই অন্য কোনো বিষয়ে জড়িত থাকতে পারে। এছাড়া আমাদের সিকিউরিটি ‍নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো।

শুল্ক গোয়েন্দার জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর আমাদের ডকুমেন্ট দেখে সন্তুষ্ট। ভ্যাটের কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এখন তারা যাচাই করে দেখবেন ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে কি না।

এর আগে ১৭ মে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজির হননি রেইনট্রির আদনান। সেদিন তার পক্ষে আইনজীবী অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবীর অধিদপ্তরে হাজির হয়ে এক মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন। তবে অধিদপ্তর ২৩ মে আদনান হারুনকে সশরীরে অধিদপ্তরে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের নির্দেশ প্রদান করে।

এদিকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে হাজিরের একদিন আগে গতকাল সোমবার (২২ মে) সকালে আদনানকে তলবের নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে আদেশ জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে দুপুরেই আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ দেন। চেম্বার বিচারপতির এই আদেশের পর মঙ্গলবার শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরে হাজির হন রেইনট্রি হোটেলের এমডি আদনান।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ করা হয়। ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন ধর্ষিতারা। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাদের নেয়া হয়। সেখানে তাদের সহযোগীদের নিয়ে ধর্ষণ করে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের পুত্র সাফাত আহমেদ।

এরপর গত ১৪ মে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শফিউর রহমান অভিযান চালিয়ে একটি কক্ষ থেকে ১০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করেন।

তবে আগের দিন শনিবার (১৩ মে) রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালায় গুলশান জোনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ওয়াবদুল কবিরের নেতৃত্বে একটি দল। কিন্তু সেখানে অবৈধ কিছু না পাওয়ার কথা জানায় পরিদর্শনকারীরা।

পরবর্তীতে শুল্ক গোয়েন্দারা রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ উদ্বার করে। এ ঘটনায় পরিদর্শনকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

এদিকে সোমবার (২২ মে) রেইনট্রি হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া ১০ বোতল মদ বিদেশি বলে প্রমাণিত হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কেমিকেল টেস্ট রিপোর্টে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। যে রিপোর্টে জব্দকৃত মদে ১৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ অ্যালকোহল পাওয়া গেছে।

ধর্ষণের ঘটনাস্থল রেইনট্রি হোটেলের মালিক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বি এইচ হারুনের পরিবারের সদস্যরা। হোটেলের চেয়ারম্যান হলেন বি এইচ হারুনের ছেলে শাহ মো. নাহিয়ান হারুন এবং এমডি আরেক ছেলে শাহ মো. আদনান হারুন। এছাড়া হারুনের স্ত্রী মনিরা হারুন, ছেলে মাহির হারুন এবং মেয়ে হোমায়রা হারুন হোটেলটির পরিচালক পদে রয়েছেন।

** আরও ২ দিনের সময় পেলো আপন জুয়েলার্স
** রেইনট্রি হোটেলের এমডিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে

‍বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
এসজে/এসআরএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।