ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভাড়ায় আনা বিকল উড়োজাহাজে মাসে ক্ষতি ৩৩ কোটি টাকা

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৭
ভাড়ায় আনা বিকল উড়োজাহাজে মাসে ক্ষতি ৩৩ কোটি টাকা

ঢাকা: ফ্লাইট শিডিউলের বিপর্যয় দেখিয়ে মিশর থেকে ভাড়ায় আনা উড়োজাহাজ ৫ মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়েতে।

যান্ত্রিক গোলযোগে উড়ান বন্ধ। অথচ ও লিজ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের জন্য গুণতে হচ্ছে বিপুল অর্থ।

যার পরিমাণ মাসে ৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩ নং সাব কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের মার্চে মিশরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে ড্রাই লিজে আনা হয় বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজটি। এক বছর ফ্লাইট পরিচালনার পরই দেখা দেয় নানান যান্ত্রিক গোলযোগ। প্রথমে বিকল হয় একটি ইঞ্জিন। পরে উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় তাও নষ্ট হয়ে যায়। এরপর একই প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়ায় আনা হয় আরো একটি ইঞ্জিন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নষ্ট-অকেজো  হয়ে পেড়ে তৃতীয় ইঞ্জিনটিও। সেই থেকে বসে আছে উড়োজাহাজটি। এতে দৈনিক ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা করে গুণতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী একমাত্র বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমানকে।

সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ২৭ মাস বসিয়ে রাখতে হবে উড়োজাহাজটিকে।   লিজের শর্ত এমন যে, পুরোটা সময়ে বাংলাদেশ বিমানকে ভাড়া গুনতে হবে ঠিকই।

কমিটি সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গেছে এই বিমান ঠিক করতে আরো সময় লাগবে। এতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হবে। এজন্য আমরা ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলেছি। কারা এর সঙ্গে জড়িত সব প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে ৩টি বিভাগ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত। এর মধ্যে কারিগরি টিম, তৎকালীন গভর্নিং বডি এবং বিমান সংস্থা। আসলে বিমানটি ভাড়া করার সময়ই  তারা পুরাতন মডেলের বিমান ভাড়া করেছিল। এ কারণে এর যন্ত্রপাতি পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য সময় বেশি লাগছে। তবে যারাই জড়িত থাকুক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে সবকিছু বের হয়ে আসবে। ’

সোমবার (২২ মে) সংসদ ভবনের কমিটিকক্ষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ,  তানভীর ইমাম, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, কামরুল আশরাফ খান, মো. আফতাব উদ্দীন সরকার এবং সাবিহা নাহার বেগম বৈঠকে অংশ নেন।
 
এছাড়া বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব,বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান,আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৭
এসএম/জেএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad