ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় হতবাক শতবর্ষী এহসান

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫২ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৭
গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় হতবাক শতবর্ষী এহসান একশ’ ৮ বছর বয়সী এহসান মণ্ডল- ছবি: বাংলানিউজ

গোদাগাড়ীর বেনীপুর (রাজশাহী) মাছপাড়া থেকে: ‘হামাদের গ্রামের লোক খুবই নিরীহ। কাহারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ পর্যন্ত করে নাকো। সেখ্যানে জঙ্গি আস্তানা কিভাবে হইলো টেরই প্যালাম নারে বাবা। এক বছরেও এমন ঘটনা ঘটেনিকো’।

ঢোক গিলে গিলে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে একশ’ ৮ বছর বয়সী এহসান মণ্ডল যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন বেনীপুর মাছপাড়া গ্রামের লোকজন জটলা করে তাকে ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন। আর তার প্রতিটি কথায় ‘হু’ ধরছিলেন।

জানালেন রাত পোহানোর পর এমন লোমহর্ষক ঘটনায় হতবাক হয়ে গেছেন তারা।

স্থানীয়রা জানালেন, মাত্র দুই মাস আগে খোলা জমির ওপর টিনসেড বাড়ি করেছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। গ্রামে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। বাড়ির মেয়েরা বাইরে বের হতো না। তবে মাঝে মধ্যে অপরিচিত লেকজন আসতো ওই জঙ্গি বাড়িতে। কিন্তু তা নিয়ে কখনও মাথা ঘামায়নি গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক ছেড়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের এই মেঠোপথের গ্রাম। বৃহস্পতিবার (১১ মে) সূর্যোদয়ের পর গুলির আওয়াজে ঘুম ভাঙে মাছপাড়া গ্রামের মানুষের। অনবরত বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ গ্রামের নির্জনতা ভাঙে। এমন ঘটনার গ্রামের শতবর্ষী এহসান মণ্ডলের মতো কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সাধারণ মানুষেরা।
বেনীপুর মাছপাড়া গ্রামের লোকজন- ছবি: বাংলানিউজ
ওই গ্রামের অজর উদ্দিন ও সোবহান আলী বলেন, পুলিশের অভিযানের আগ পর্যন্ত তারা জঙ্গি আস্তানার বিষয়টি টের পাননি। পেলে পুলিশ আসার আগে তারাই প্রতিরোধ গড়ে তুলতেন। সেই শক্তি ও সাহস তাদের ছিলো। এই ঘটনা তাদের গ্রামকে কলঙ্কিত করলো। এখন বাহিরের লোকে আমাদের সরল মনে বিশ্বাস করবেনা বলেও মন্তব্য করেন মাছপাড়া গ্রামের এই মানুষগুলো।

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৫ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে আস্তানা থেকে বের হয়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা এ আত্ম‍াহুতি দেন। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই উৎপল ও কনস্টেবল তৌহিদুল ইসলাম।

এর আগে জঙ্গিরা ফায়ার সার্ভিস কর্মী আব্দুল মতিনকে (৪৯) বল্লম দিয়ে খুঁছিয়ে আহত করে। সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার হাসপাতালে নিয়ে গিলে তিনি মারা যান। এছাড়া আস্তানা থেকে জোবায়ের ও আপিয়া নামে দুই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে সকাল থেকে আস্তানা থেকে জঙ্গিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গ‍ুলি ছোড়ে

নিহত জঙ্গিরা হলেন- সাজ্জাত হোসেন (৫০), স্ত্রী বেলী বেগম (৪৫), ছেলে আল আমিন (২০) ও সোয়াহেব (২১), মেয়ে কারিমা (২২)।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৭
এসএস/জিপি/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।