ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

'মামলা যতো জটিলই হোক লেগে থাকলে পুলিশ পারে'

রীনা আকতার তুলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
'মামলা যতো জটিলই হোক লেগে থাকলে পুলিশ পারে' বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন মোল্যা নজরুল ইসলাম- ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট সংক্ষেপে সিআইডি। দেশের চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর তদন্তভার পড়ে এ সংস্থাটির ওপর। কাজে-কর্মে তাদের সাফল্যও কম নয়। সিআইডিতে নানা পদে রয়েছেন পুলিশের বহু সৎ, সাহসী, চৌকস ও বৃদ্ধিদীপ্ত কর্মকর্তা। তাদেরই একজন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম। পড়ুন স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রীনা আকতার তুলির লেখায় সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব:

বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরলেন দীর্ঘ কর্মময় জীবনের চালচিত্র। উঠে এলো তদন্তের ক্ষেত্রে ঝুঁকি, ছায়া-তদন্ত, ক্লু-বিহীন মামলার রহস্য উৎঘাটন, অপরাধের ধরন বদল, পেশাগত দায়িত্বে সফলতা ও বিফলতার নানা গল্প।


 
''ক্লু-বিহীন মামলার ক্ষেত্রে সততা, সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তাই বড় পুঁজি। তবে মামলা যতো জটিলই হোক, পুলিশ লেগে থাকলে সবই পারে। রহস্য উদঘাটনে সফলতা আসবেই,'' বলছিলেন মোল্যা নজরুল ইসলাম।

কাজের ক্ষেত্রে সফলতা আনতে করণীয়গুলো কী কী জানতে চাওয়া হলে তিনি একথা বলেন।

বাংলানিউজ: দিন দিন অপরাধের ধরন বদলাচ্ছে। এসবের সঙ্গে গোয়েন্দারা কীভাবে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছেন?

মোল্যা নজরুল ইসলাম: এটা ঠিক যে, আগের চেয়ে এখন অপরাধের ধরন অনেক বদলে গেছে। অপরাধীরা প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটাচ্ছে। যেমন, লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের অপহরণ করে দেশের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানো হয়েছে। এমন গোপন লেনদেনের কথা গোয়েন্দারা তৎপর না থাকলে আপনি কী করে জানতেন!

বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন মোল্যা নজরুল ইসলাম।  ছবি: শাকিল আহমেদবাংলানিউজ: সে ক্ষেত্রে সিআইডি কতটুকু সফল বলে মনে করেন?

মোল্যা নজরুল ইসলাম: আমরা বলবো না যে আমরা ষোল আনাই সফল। তদন্তের ক্ষেত্রে চাই সততা ও সহসিকতা। এই যেমন, এক সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির খুন হওয়ার ভিডিও  ছিল। কিন্তু এই মামলার রহস্য এখনও উৎঘাটিত হয়নি।

বাংলানিউজ: ঘটনার ক্লু না থাকলে তদন্ত কীভাবে হয়?

মোল্যা নজরুল ইসলাম: ক্লু-বিহীন মামলার ক্ষেত্রে সততা, সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তাই বড় পুঁজি। মামলা যতো জটিলই হোক না কেন পুলিশ লেগে থাকলে সবই পারে।

বাংলানিউজ: কোন ক্ষেত্রে ছায়া-তদন্তের প্রয়োজন হয় বলে মনে করেন?

মোল্যা নজরুল ইসলাম: ধরেন, একজন মাদকব্যবসায়ী ইয়াবা-ব্যবসা করেন। আগে ফেন্সিডিল ব্যবসা করে অনেক টাকা আয় করেছেন। মাদক পেয়ে আমরা (পুলিশ) মামলা দিয়ে তাকে আদালতে পাঠাই। কিন্তু তার অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে যে টাকা আয় হয়েছে তার সুরাহা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে মানিলন্ডারিংয়ের (অর্থপাচার) মামলা দেওয়া প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ছায়া-তদন্তের প্রয়োজন হয়। সেসময় আয়, আয়কর, ব্যাংকঅ্যাকাউন্ট, ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তদন্ত শুরু হবে।

বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন মোল্যা নজরুল ইসলাম।  ছবি: শাকিল আহমেদবাংলানিউজ: পুলিশ সবই পারে, কিন্তু সব পারতে গিয়ে ঝুঁকিও তো বাড়ে...

মোল্যা নজরুল ইসলাম: যখন আমরা অপরাধীকে ধরি,  সে বোঝে সে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পারবে না। জঙ্গিরা মনে করে, তাদের আমরা ধরেছি, কেননা আমরা ইসলামের শত্রু। তখন সে পুলিশকেও শক্র ভাবে। এছাড়া কোনো পুলিশ যদি অপরাধীকে ধরে এবং ধৃত ব্যক্তি প্রকৃত অপরাধীই হয়, সেক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে না বলেই মনে করি। কারণ এই কাজটা নিষ্ঠার। পুরো দেশ আপনার পাশে।

বাংলানিউজ: জঙ্গিদের উগ্র-হিংস্র মানসিকতাই কি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য  দায়ী?

মোল্যা নজরুল ইসলাম: আমরা তো জানি জঙ্গিরা ইসলামের নামে ভুল পথে পরিচালিত। এছাড়া তাদের ব্রেনওয়াশ করা হয়। আর ধর্মের নামে সুড়সুড়ি তো আছেই। এসব ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে। জঙ্গিবাদ এবং যেকোনো ঝুঁকি ধীরে ধীরে কমে আসবে... 
 
দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব

বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
আরএটি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।