ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শত বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনায় হাওর ব্যবস্থাপনা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
শত বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনায় হাওর ব্যবস্থাপনা বাংলানিউজের সাথে সাক্ষাৎকারের কথা বলছেন ড. শামসুল আলম। ছবি- দীপু মালাকার

ঢাকা: সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) প্রণয়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ(জিইডি)। এক কথায়, বাংলাদেশের যেকোনো পরিকল্পনায় সম্মুখভাগ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে জিইডি। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জিইডি-সদস্য(সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম।

বৃহস্পতিবার বিকেলে (২৭ এপ্রিল) শেরে বাংলানগরস্থ পরিকল্পনা কমিশনে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মফিজুল সাদিক । দু’পর্বের সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব পড়ুন আজ:
 

বাংলানিউজ: বর্তমানে হাওরে মহাবিপর্যয় চলছে।

বারবার হাওরবাসীকে যাতে করে এহেন বিপর্যয়ের সম্মুখীন না হতে হয়, এই নিয়ে সামনে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
 

ড. শামসুল আলম: বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল বদ্বীপপ্রধান (ডেল্টাইক) দেশ । এই লক্ষেই বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ ও বদ্বীপ রূপকল্প (ডেল্টা ভিশন) গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি বছরে বদ্বীপ প্রকল্প গৃহিত হবে বলে আমরা আশা করি। এরপরেই আমরা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবো। এটা পানি ব্যবস্থাপনাকেন্দ্রিক। শত বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনায় অন্যতম গুরুত্ব দেয়া হয়েছে  হাওর ব্যবস্থাপনাকে।
 
হাওরে কৃষি, মৎস্য, শিল্প, বনায়ন, পানি ব্যবস্থাপনা, স্যানিটেশন, পরিবেশ, জীবন এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী একশ বছরে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। ক্রমান্বয়ে এটাকে হালনাগাদ করা হবে।
 
হাওরে সমস্ত প্রকল্প যাচাই করে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা করবো। হাওর এলাকায় প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার করবো। অকাঠামোগত সংস্কারও করবো। অকাঠামোগত সংস্কারের মধ্যে আছে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করতে স্কুল, কলেজ নির্মাণ। হাওরের পরিবেশগত জীববৈচিত্র্যের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবগত করানোও দরকার। পরিবেশ যাতে ধ্বংস না হয় সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হবে। হাওর এলাকার শিক্ষাকে  ঢেলে সাজাতে হবে। আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বদ্বীপ পরিকল্পনার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হাওর ব্যবস্থাপনা। হাওরকে আমরা নানা দিক থেকে দেখেছি। হাওর জনপদের সমাজকে আরও উন্নত করতে দরকার নানা পদক্ষেপ। হাওর এলাকায় সবাইকে নিয়েই উন্নয়ন প্রকল্প তৈরি করা হবে। এর পাশাপাশি হাওরে আরও সচেতনতাও বাড়াতে হবে।
 
বাংলানিউজ: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে হাওরের গুরুত্ব অপরিসীম। সৃষ্ট বিপর্যয় সাময়িকভাবে কাটিয়ে উঠার উপায় কি?
বাংলানিউজের সাথে সাক্ষাৎকারের কথা বলছেন ড. শামসুল আলম।  ছবি- দীপু মালাকার 
ড. শামসুল আলম: হাওর বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সম্পদের দিক থেকে পরিবেশগতভাবে, মানুষের জনজীবন, খাদ্য সরবরাহ ও  পুষ্টির দিক থেকে হাওর একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ এলাকা। ভূ-গর্ভস্থ্য জলরাশির একটা বড় অংশও হাওর থেকে আসে। হাওর সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশের গুরুত্ত্বপূর্ণ এক সম্পদ। হাওর আমাদের জীবন জীবিকার জন্য অপরিহার্য বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশ। এখানের জীববৈচিত্র্য আমাদের অন্যতম অর্থনৈতিক সম্পদ।   এ বছর যেটা ঘটেছে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণে এমনটি ঘটেছে। তবে সচারচর এমনটি ঘটে না। তারপরও প্রতিবছর কিছু না কিছু বন্যা হয়ে থাকে। এ বছর বেশি হয়েছে; কারণ এপ্রিল মাসে স্বল্প সময়ে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত হয়েছে।

বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি পাহাড়ি ঢল সরাসরি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে আমাদের বাঁধগুলো ভেঙ্গে গেছে। প্রায় সবক’টি বাঁিই ভেঙ্গে গেছে।   হাওরগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার মধ্যে সুনামগঞ্জে হাওর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হাওরবাসী একটিমাত্র ফসলের ওপর নির্ভরশীল। একমাত্র সম্বল হিসেবে বিবেচিত একটিমাত্র ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কারণে সামাজিক ব্যবস্থা ও জীবনজীবিকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সেইজন্যই সরকার ও জনগণ উদ্বিগ্ন। সরকার একইসঙ্গে যথেষ্ট তৎপর। আমাদের প্রথম কাজ  তাদের পাশে দাঁড়ানো ও সাহস দেয়া।

বাংলানিউজ: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

ড. শামসুল আলম: বাংলানিউজকেও ধন্যবাদ

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
এমআইএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ