ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নৌ-যান মেরামত কারখানা অন্যত্র স্থাপন না হলে আমরণ অনশন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
নৌ-যান মেরামত কারখানা অন্যত্র স্থাপন না হলে আমরণ অনশন সংবাদ সম্মেলন/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: খুলনা মহানগরীর কাস্টম ঘাট এলাকা থেকে নৌযান মেরামত কারখানা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ প্রকল্প অন্যত্র সরিয়ে না নিলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে খুলনা কাস্টমঘাট ব্যবসায়ী এবং এলাকাবাসী এ ঘোষণা দেন। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রথমবারের মতো খুলনায় দেশের সর্ববৃহৎ নৌযান মেরামত কারখানা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। সরকারের এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু অতীব কষ্টের বিষয় সরকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে খুলনা নগরীর কাস্টমঘাট এলাকা বেছে নিয়েছে। এজন্য নদীর তীরের রকি ডকইয়ার্ড থেকে উত্তর দিকের ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্য প্রায় তিন একর জায়গা ৯৯ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল এ ইজারা দলিলে স্বাক্ষর করেছেন খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান এবং যানবাহন অধিদফতরের পরিচালক মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ। কাগজে-কলমে ওই দিনই জমির দখল তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছরের অধিকাল ধরে এ এলাকায় গড়ে ওঠা বৃহৎ ব্যবসায়িক কেন্দ্রটি ব্যবসাবান্ধব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। আমরা এ এলাকার ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে থেকে নদীর তীরবর্তী খানাখন্দে ভরা অসমতল এবং ব্যবসার অনুপযোগী খাস জমি একসনা বন্দোবস্তো নিয়ে বহু কষ্ট ও অর্থের বিনিময়ে জমিকে উন্নত করে ব্যবসার উপযুক্ত করে গড়ে তুলেছি। প্রতিষ্ঠিত করেছি ইট, বালু, সিমেন্ট, পাথর, কয়লা, কাঠসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এই বৃহৎ ব্যবসায়িক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শেখ আব্দুল কাইয়ুমের পরিবারসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবার পরিজনের ভরণ-পোষণ করছেন।

এসব ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লগ্নি রয়েছে। বাকি পাওনা রয়েছে লাখ লাখ টাকা। ব্যাংক ঋণ নিয়ে তারা ব্যবসা করছেন। কিন্তু ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে এসব ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলে তারা সর্বশান্ত হয়ে পড়বে। লগ্নিকৃত অর্থ আদায় ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। পাশাপাশি এ বৃহৎ ব্যবসায়িক অঞ্চলটি হারিয়ে যাবে। এছাড়া ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এ অঞ্চলটি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ এলাকার একাংশে বস্তিবাসীদের বসবাস। তাদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। যা অচিরেই চালু হবে। এখানে নৌযান মেরামত কারখানা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হলে লোহা-লক্করের শব্দে হাসপাতলের রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।

লিখিত বক্তব্যে আর বলা হয়, ভৈরব নদের পাড়ে অবস্থিত টুটপাড়া মৌজার এ জমির দাম রয়েছে ৫৭ কোটি ৩২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। কিন্তু মাত্র এক লাখ এক হাজার টাকা প্রতীকী মূল্যে সরকারি যানবাহন অধিদফতরের অনুকূলে এ দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই দলিল বাতিল করে ব্যবসায়ীদের অনুকূলে এ জমি ৯৯ বছরের জন্য বরাদ্দ দিলে আমরা ৫৭ কোটি ৩২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা দিতে রাজি আছি। এ টাকা সরকার অন্যকোনো উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে পারবে। আমরাও শংকামুক্ত হয়ে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারবো। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারেন আমাদের রক্ষা করতে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার খলিফা, কাউন্সিলর মো. মাহবুব কায়সার, মুক্তিযোদ্ধা মো. ওহিদুজ্জামান, খুলনা জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াকুব আলী খান পলাশ, সাবেক কাউন্সিলর কণিকা সাহা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
এমআরএম/ওএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।