ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পর্যটনমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পর্যটনমন্ত্রী পর্যটন সংক্রান্ত সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন- ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: পর্যটন খাতের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

তিনি বলেছেন, ‘এই খাতের বিকাশে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রী যদি একটু দৃষ্টি দেন তাহলে অনেক দূর এগিয়ে যাবে এই খাত। পর্যটন খাত নিয়ে গর্ব করার পর্যায়ে এসেছি এটা আমি বলবো না, তবে বাংলাদেশ অবশ্যই এই খাত নিয়ে গর্ব করতে পারবে।


 
শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সোনারগাঁও হোটেলে ‘পর্যটন বর্ষ ২০১৭-২০১৮- ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের ভূমিকা ও প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দৃষ্টি কামনা করেন।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও ট্রাভেল ম্যাগাজিন ‘ভ্রমণ’ পর্যটন বর্ষকে সামনে রেখে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

বেসমরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন-  বাংলাদেশ ব্যংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরস্তু খান, সিপিডির গবেষক ড. তৌফিক খান, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অপরূপ চৌধুরী, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও ড. মো. নাসির উদ্দিন, পাট বাংলাদেশ চ্যাপ্টার সভাপতি শাহিদ হামিদ, টোয়াব সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ, এসআইবিএল এর এএমডি এ এম এম ফরহাদ প্রমুখ।

রাশেদ খান মেনন বলেন, যে মুহুর্তে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করা হয়, ঠিক সেই সময় তাবেলা সিজার ও হোসিও কুরি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যে কারণে আমরা আতঙ্কে ছিলাম। যদিও আমরা বিদেশি পর্যটকের ক্ষেত্রে ধাক্কা খেয়েছি।
 
ট্যুরিস্ট পুলিশ ও ইমিগ্রেশনের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই অর্থ বছরে পর্যটন খাত দারুণ এগিয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের তথ্যানুযায়ী গত বছরের অভ্যন্তরীণ ট্যুরিস্ট ছিলো ৯৮ লাখ। আর ইমিগ্রেশনের তথ্যানুযায়ী বিদেশি পর্যটক এসেছে ৬ লাখের উপরে। কাজেই গতবছর পর্যটন খাত দারুন গতিতে এগিয়েছে।
 
পর্যটনখাত বিকাশে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন,  ট্যুরিজম সেক্টরে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘ দিনের দাবি গাড়িগুলো যদি ডিউটি ফ্রি অথবা রিডিউস ডিউটি দেওয়া যায় তাহলে অনেক সুবিধা আসতো। আমি নিজে অর্থমন্ত্রীকে অনেক বার বলেছি। ‌উনার উৎসাহ আছে কিন্তু নিচের দিকে এসে কেন জানি আটকে যান। প্রয়োজনে এই সেক্টরে যেসব গাড়ি কেনা হবে সেগুলোর রং ও নম্বর প্লেট পরিবর্তন করে দেন। এই শিল্পের বিকাশে আর্থিক প্রণোদনা দরকার বলেও মনে করেন মন্ত্রী।
 
দেশের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পর্যটনে কিছু সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, আমাদের এখানে ৬০ বছরের উপরে প্রবীণ নাগরিক রয়েছে ৩০ লাখ। তারা বিভিন্ন দেশের ভেতরেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে চান। তাদের জন্য হোটেল, বিমানে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিলে এইখাতে বিনিয়োগ বাড়বে।
 
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে বেশ কিছু বিলাস বহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এসব গাড়ি যদি পর্যটন খাতে দেওয়া যায় অথবা সামান্য শর্তে গাড়িগুলো ছাড়া যায় তাহলে এই শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে।
 
ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরস্তু খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যটন খাতকে সিএসআর ভুক্ত করলে আমাদের জন্য বিনিয়োগ করা সহজ হবে। আমরা সুনির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ করতে পারবো, যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পাই।
 
সিপিডির গবেষক ড. তৌফিক‍ুল ইসলাম খান বলেন,  বাংলাদেশের পর্যটনকে আমরা এখনও সেভাবে বিকাশিত করতে পারিনি।

ব্যুরো অব স্ট্যাটিকস এর পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে পর্যটক ছিলো ২ লাখ, ২০০৮ সালে ৪ লাখ। সেই হার কমে ২০১৪ সালে হয়েছিল ১ দশমিক ২৫ লাখ। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, শ্রীলংকা, নেপালে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
তিনি বলেন, ওর্য়াল্ড ট্যুরিজমের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের জিডি‍পিতে সরাসরি ২ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ রাজস্ব আসছে। এটা দুই এরমধ্যেই ঘুরাফেরা করবে।
 
তিনি বলেন, বিশ্বের ১৩৬টি দেশের মধ্যে পর্যটন খাতে বাংলাদেশের ৠাংকিং অবনমন হয়েছে। আগে ছিল ১২৭তম এখন ১২৫তম দেশ। আমরা আসলে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছি না, সব ক্ষেত্রে উচ্চ মূল্যের জন্য।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
এসএম/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।