ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে সর্বশান্ত মোহনগঞ্জবাসীর আর্তনাদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে সর্বশান্ত মোহনগঞ্জবাসীর আর্তনাদ ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন

কুড়িগ্রাম: বৈশাখ মাসেই ব্রহ্মপুত্র নদের করালগ্রাসী ভাঙন পিছু ছাড়ছে না দিশেহারা তীরবর্তী শত শত পরিবারকে। ভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি, আসবাবপত্র, সহায় সম্বল সরাতে সরাতে হাঁপিয়ে উঠেছেন মানুষজন। ৩/৪ বার বাড়ি-ঘর সরিয়েও ভাঙন থেকে নিস্তার পাচ্ছে না পরিবারগুলো। 
 

ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবল ভাঙনের মুখে রাজিবপুর উপজেলার প্রায় হাজার পরিবার ১৫ দিনের ব্যবধানে ঘর-বাড়ি ভিটে-মাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়িয়েছেন।  

সরেজমিনে জানা যায়, রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ও এর পার্শ্ববর্তী প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের তীব্র ভাঙনের মুখে প্রতিনিয়তই বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়িসহ ফসলি জমি।

তীব্র ভাঙ্গন চলছে মোহনগঞ্জ বাজার, নয়ারচর, চর নেওয়াজি, শংকর মাধবপুর, হাজিপাড়া, ফকিরপাড়া ও ব্যাপারিপাড়াসহ প্রায় ২৫টি গ্রাম জুড়ে।

এছাড়া ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে- মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ, মোহনগঞ্জ বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ নানা স্থাপনা। ভাঙনরোধে দ্রুত সরকারের সুদৃষ্টি কামনা এলাকাবাসীর।  

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন কবলিত মোহনগঞ্জের শেখ জামাল উদ্দিন (৬০), চর নেওয়াজির জোহুরা বেগম (৫০) বাংলানিউজকে জানান, বর্ষা শুরু না হইতেই তিন/চার দফায় বাড়ি ভাইঙ্গা দিছে ব্রহ্মপুত্র। আবারও ভাইংতে ভাইংতে ঘর-বাড়ি নদীর কিনারে পড়ছে। দুই-একদিনের মধ্যে সরাইতে না পারলে নদের গর্ভে চইলা যাবে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন, যেন নদী ভাঙনটা বন্ধ কইরা দেয়।

ভাঙ্গনের শিকার ফকিরপাড়ার আজগর আলী (৬৫) ও ব্যাপারিপাড়ার সোবহান মিয়া (৫০) বাংলানিউজকে জানান, ৭/৮ দিন হয় ঘর-বাড়ি সরাইয়া অন্যের জমিতে আশ্রয় নিছি, ট্যাহার অভাবে ঘর তুলবার পারি নাই। আবারো ভাঙন দেহা দিছে। ভিটে-মাটি, আবাদি জমি সবই নদীতে। কই যে যামু।

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানালেন, বর্ষা শুরুর আগেই ব্রহ্মপুত্র ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। প্রায় দেড় হাজার পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে বর্তমানে নিঃস্ব। ভিটে-মাটিসহ ফসলি জমি হারানোর আশংকায় নির্ঘুম রাত কাটছে ভাঙনের হুমকিতে থাকা পরিবারগুলোর। সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই, অতিদ্রুত যেন বরাদ্দ দিয়ে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলার বির্স্তীণ এলাকাজুড়ে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন চলছে। আমরা এ দু’টি উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার স্থায়ী নদীতীর সংরক্ষণ কাজ করেছি। প্রায় ২০ কিলোমিটার ড্রেজিংসহ একটি প্রকল্পের কাজ প্রক্রিয়াধীন। মোহনগঞ্জ বাজার এলাকায় ভাঙন রোধে গত বছর কিছু কাজ হয়েছে। আরো ৩শ’ ৩০ মিটার কাজের অনুমোদন পাওয়া গেছে, শিগগিরই কাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
কেজেড/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।