ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এবার ঝুলন্ত ফ্লাইওভার, ক্যাবলে পাড়ি দেবে বুড়িগঙ্গা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
এবার ঝুলন্ত ফ্লাইওভার, ক্যাবলে পাড়ি দেবে বুড়িগঙ্গা প্রতীকী

ঢাকা: দেশে এই প্রথম নির্মিত হতে যাচ্ছে ঝুলন্ত ফ্লাইওভার, যা ক্যাবলের মাধ্যমে পাড়ি দেবে বুড়িগঙ্গা নদী। বৃহৎ একটি ফ্লাইওভারের এ অংশটি বিদ্যমান বুড়িগঙ্গা ৪র্থ সেতুর ওপর দিয়ে চলে যাবে। 

নান্দনিক নির্মাণশৈলির কারণে এটি যানজট নিরসনের পাশাপাশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হতে যাচ্ছে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে ঢাকা-মাওয়া রোডের চুনকুটিয়া পর্যন্ত ফ্লাইওভার।

এ ফ্লাইওভারটিরই একটি অংশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাড়ি দেবে বুড়িগঙ্গা। মোট ১০ দশমিক ২৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারের মধ্যে বুড়িগঙ্গার ওপরে পড়েছে ৪৪২ মিটার।  

স্বতন্ত্র প্রকৌশলীর মাধ্যমে নির্মাণকাজ সুপারভিশনসহ নানা ধরনের নকশা তৈরি করা হয়েছে ফ্লাইওভারটির।  নকশা অনুসারে বুড়িগঙ্গার দুই পাশে দু’টি করে মোট চারটি পিলার নির্মিত হবে। মাঝখানে আর কোনো পিলার থাকবে না। ক্যাবলের মাধ্যমে পিলার দু’টি আটকে রাখবে ফ্লাইওভারের ওই ৪৪২ মিটার অংশ। প্রতীকী

বুড়িগঙ্গার ওপরের এ অংশটি হবে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের নয়নাভিরাম বহুরঙা ঝুলন্ত সেতুর মতো।  

চারলেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভারটি নির্মিত হবে শান্তিনগর থেকে আরামবাগ, বিজয়নগর, নয়াবাজার, চতুর্থ বুড়িগঙ্গা সেতু ও কদমতলী ইন্টারসেকশন হয়ে চুনকুটিয়া পর্যন্ত। দুই লেনযুক্ত পাঁচটি আপ র‌্যাম্প ও পাঁচটি ডাউন র‌্যাম্প থাকবে। টোল প্লাজা হবে তিনটি।  

পরিকল্পনা কমিশন সূ্ত্র জানায়, ‘শান্তিনগর থেকে ঢাকা-মাওয়া রোড (চুনকুটিয়া) পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে প্রকল্প  মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পিইসি’র সভায় বলা হয়েছে, পদ্মাসেতু চালু হলে মাওয়া এলাকায় যানবাহনের চাপ বাড়বে। সে যানজট নিরসনে দ্রুততম সময়ে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। প্রতীকীসংশ্লিষ্টরা আশাবাদী যে, পিইসি’র এ ইতিবাচক মনোভাবে খুব দ্রুতই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেয়ে চলতি বছরেই টেন্ডার হতে যাচ্ছে প্রকল্পটির।
 
সূত্র জানায়, মূল ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হবে ১ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। জমি অধিগ্রহণ ও সংযোগ সড়কের ব্যয় ৪২২ কোটি টাকাসহ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। শুরুতেই জমি অধিগ্রহণ ছাড়াও প্রকল্প এলাকার ঢাকা ওয়াসা, ডিপিডিসি, বিটিসিএল, তিতাস গ্যাস, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ইত্যাদির ইউটিলিটি স্থানান্তর করা হবে।  
  
প্রকল্প পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, প্রস্তাবিত ফ্লাইওভারের বাবুবাজার প্রান্তে এক্সট্রা ডোজড ক্যাবল স্টেইড ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তের ল্যান্ডিং পয়েন্ট কদমতলী ইন্টারসেকশন থেকে ৬৬৪ মিটার দক্ষিণে চুনকুটিয়া ইন্টারসেকশন পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। প্রতীকী
 
বাবুবাজার সেতুর পাশে নতুন সেতু হবে। সে সেতু অতিক্রম করে ঝিলমিলে মিলিত হবে ফ্লাইওভারটি। ঝিলিমিল ফ্লাইওভার ও বাবুবাজার সেতু সংলগ্ন এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং কদমতলী গোল চত্বর থেকে মাওয়া পর্যন্ত ১০০ ফুট প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে।  
 
তিনি জানান, ফ্লাইওভারটিতে পরিবহন ও মানুষের যাওয়া-আসার মোট ৮টি পথ থাকবে। ফলে যানজট নিরসনের পাশাপাশি ‍পুরান ঢাকার মানুষেরা স্বচ্ছন্দে নিত্যদিনের কাজকর্ম করতে পারবেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad