ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বেহাল দশা হবিগঞ্জ পৌর সাধারণ পাঠাগারের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
বেহাল দশা হবিগঞ্জ পৌর সাধারণ পাঠাগারের বেহাল দশা হবিগঞ্জ পৌর সাধারণ পাঠাগারের

হবিগঞ্জ: জেলা গঠিত হওয়ার আগেই প্রতিষ্ঠিত হয় হবিগঞ্জ ‘পৌর সাধারণ পাঠাগার’। দুর্লভ লক্ষাধিক বইয়ের সমাহার নিয়ে ১৯৫৪ সালে পথ চলতে শুরু করে এ লাইব্রেরি। ৬২ বছরের পুর‍ানো এই পাঠাগার হবিগঞ্জ জেলা শহরের স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় অবস্থিত।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে সরেজমিন দেখা যায়, পুর‍ানো পাঠাগার ভবনটি চরম অবহেলায় জরাজীর্ণ ও দুর্দশাগ্রস্ত। ভবনের আশপাশের এলাকা কাদা মাটিতে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে।

চারপাশে রয়েছে আবর্জনা। জানালাগুলো সব ভাঙা। জনহিতকর এ প্রতিষ্ঠানটির দুইতলা ভবনের এক তলায় পাঠকরা পড়াশোনা করছেন। অন্য তলায় পরিত্যক্ত মালামাল র‍াখা হয়। পাঠাগারটিতে বসার জন্যে পুরানো ও কাঠের নড়বড়ে ৩২টি চেয়ার ও চারটি টেবিল ও বই রাখার জন্যে ৩২টি আলমিরা রয়েছে। আলমিরাগুলোর অবস্থাও নড়বড়ে।

বেহাল দশা হবিগঞ্জ পৌর সাধারণ পাঠাগারের

পৌর সাধারণ পাঠাগারের লাইব্রেরিয়ান মদন গোপাল চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, ৩১ বছর ধরে তিনি এ লাইব্রেরির দায়িত্ব পালন করছেন। একজন রাত্রীকালীন পাহারাদার ছিলেন। তিনিও মারা গেছেন। এখন তিনি একাই পুরো লাইব্রেরি দেখাশোনা করছেন। শুক্র, শনি ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লাইব্রেরিটি তিনি খোলা রাখেন। বেতন নয় তিনি এ দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিমাসে সামান্য টাকা সম্মানী পান।

তিনি জানান, পাঠক সংখ্যা আগে বেশি থাকলেও এখন লাইব্রেরিতে বসার পরিবেশ ভাল না থাকায় গড়ে প্রতিদিন ৪০-৫০ জন বিভিন্ন বয়সের পাঠক আসেন। এর মধ্যে ৪-৫ জন নিয়মিত নারী পাঠক আছেন। আগে অনেক সংবাদপত্র রাখা হলেও এখন প্রতিদিন সাতটি দৈনিক পত্রিকা (প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, যুগান্তর, সমকাল, ইত্তেফাক, জনকন্ঠ ও ইংরেজি ডেইলি স্টার) ও মাসিক ভারত বিচিত্রাটি নিয়মিত রাখা হয়।

বেহাল দশা হবিগঞ্জ পৌর সাধারণ পাঠাগারের

তিনি আরও জানান, প্রায় দুই বছরের মধ্যে কোনো নতুন বই এ লাইব্রেরিতে আসেনি। তবে রেফারেন্স, গবেষণা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, জীবনী ও সাহিত্য-উপন্যাস বিষয়ক গ্রন্থসহ এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই থাকলেও গল্পের বইগুলোই বেশি পড়া হয়। এখান থেকে অনেক শিক্ষক সাপ্তাহিকভাবে বাসায় নিয়ে বই পড়েন। কিন্তু বর্ষায় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি ঢোকায় অনেক বই দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পাঠক না আসায় বইগুলো যথার্থ কাজে আসছে না।

এদিকে, হবিগঞ্জ পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের রশি টানাটানিতে বেহাল অবস্থা ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির। বর্তমানে লাইব্রেরিটি জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করে স্থানীয়রা জানায়, পাঠাগার ভবনটি সংস্কার করে পাঠকদের জন্য ভাল পরিবেশ তৈরি করা হোক।

** জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে বই আছে, পাঠক নেই!
** ‘জনবল ও অর্থ সংকটে’ বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার
** খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের দুর্দশা চরমে
** ময়মনসিংহের আলোর পাঠশালায় দু’দিন তালা!
** বরিশাল গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষও বেহাল!
** গরুর অভ্যর্থনা মৌলভীবাজার গণগ্রন্থাগারে!
** ফেনীর পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে জম্পেশ আড্ডা
** মানিকগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগার কুকুরের বিচরণক্ষেত্র!
** সপ্তাহে ৩ দিনই ছুটি দিনাজপুর পাবলিক লাইব্রেরিতে!‍
** কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরির হালচাল
** পাঠকের খোরাক সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরিতে

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।