ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দ্বিতীয় দফায় শুরুর অপেক্ষায় অপারেশন ঈগল হান্ট

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
দ্বিতীয় দফায় শুরুর অপেক্ষায় অপারেশন ঈগল হান্ট অপারেশন ঈগল হান্ট

শিবনগর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে: দ্বিতীয় দফা অভিযান শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে শিবনগর। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের এই গ্রাম বুধবার রাত থেকে কর্ডন করে রাখা হয়েছে।

অপারেশন ‘ঈগল হান্ট’ শুরুর পর প্রথম দফার অভিযান বুধবার (২৬ এপ্রিল) রাত সোয়া ৮টায় স্থগিত করে স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স (সোয়াট) টিম। এর আগে বিশেষ এই বাহিনীর সদস্যরা বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শিবনগর পৌঁছায়।

এ সময় তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)।

প্রথম দফার অভিযান শেষে বুধবার রাতে সোয়াটের উপ-পুলিশ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার জানান, রাতের মত অভিযান সমাপ্ত। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে আবারও অভিযান শুরু করা হবে। রাতে আমরা ভেতরে ঢুকতে পারিনি। সকালে ভেতরে না ঢোকা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো হতাহতের তথ্য বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযানে আপাতত কোনো আটক বা উদ্ধার নেই।

এদিকে, রাতের অভিযানের পর বর্তমানে ওই বাড়িসহ আশপাশের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সোয়াট টিম ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছালেই শুরু হতে পারে অপারেশন ঈগল হান্টের দ্বিতীয়ভাগ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার এটিএম মুজাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রাজশাহী থেকে তিন প্লাটুন বিশেষ ফোর্স ঘটনাস্থলে রয়েছে। এছাড়া ঢাকা থেকে সোয়াট টিম এসেছে। এখন অভিযান তারাই পরিচালনা করছে। পুলিশ কেবল তাদের বাইরে থেকে সাপোর্ট দিচ্ছে। অভিযান শেষ হলে তারা সোয়াটের কাছ থেকে ওই বাড়ির দায়িত্ব বুঝে নেবে। আপাত নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়িটির আশপাশে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান পুলিশ সুপার।

এর আগে গতকাল বুধবার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) থেকে জঙ্গি সদস্য রফিকুল ইসাম ওরফে আবুর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এই জঙ্গি সদস্যের নিজের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামেই। তবে ভিন্নমত অবলম্বনের কারণে বাড়ি থেকে ৯ বছর আগে আলাদা করে দেওয়া হয় আবুকে।

এই সময় বিয়ে করেন আবু।   বিয়ের পর প্রথম দিকে শ্বশুর বাড়িতেই থাকতো আবু। পরে নিজ গ্রামে ফিরে সাইদুর রহমান জেন্টুর ওই বাড়ি ভাড়া নেন। সে ওই বাড়িতে স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে থাকেন। ওই বাড়ির মালিক সাইদুর রহমান জেন্টু একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

অবাধ্য হওয়ায় ছেলেকে শাসনের সুরে বাড়ি ছাড়তে বলেছিলেন বাবা-মা। এক দিন আগে ঈদ করা, সব ইমামের পেছনে নামাজ আদায় না করা, নামাজ শেষে মোনাজাত না করা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে সমাজে বিব্রত ছিলেন তারা। ধর্মপালন নিয়ে ছেলের এসব নতুন নিয়ম-কানুন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। ধর্মপালন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় আবুকে।

তবে আবুর দুই মেয়ের যাতায়াত ছিল এই বাড়িতে। বড় মেয়ের নাম নূরসাদিয়া নূরি (০৭) ও সুরাইয়া ইসলাম সাজেদা (৫)। এর মধ্যে ছোট মেয়ে সাজাদকে নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মা ফুলসানা বেগমের সঙ্গে দেখা করে গেছেন বলে জানিয়েছেন আবু ছোট ভাই সবুরের স্ত্রী রুনা খাতুন। আবুর ছবির কথা জিজ্ঞেস করলে রুনা বলেন, তিনি (আবু) ছবি তোলেন না। আর ছোট বেলার ছবি বাড়ি ছাড়ার সময় নিয়ে গেছেন আবু।

অপারেশন ‘ঈগল হান্ট’ ফের সকালে
চাঁপাইয়ে জঙ্গি আস্তানায় অপারেশন ‘ঈগল হান্ট’
চাঁপাইয়ে জঙ্গি আস্তানায় গুলির আওয়াজ

মায়ের আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া দেয়নি জঙ্গি আবু
চাঁপাইয়ে জঙ্গি আস্তানার দায়িত্ব সোয়াটের হাতে
হেলিকপ্টারে এলো সোয়াট, রাতে অভিযান​

হেলিকপ্টারে যাচ্ছে সোয়াট
ব্যবসায়ী পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া নেয় জঙ্গি রফিকুল
চাঁপাইয়ের জঙ্গি আস্তানায় যাচ্ছে সোয়াট
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘেরাও

জঙ্গি আবু’র এমন পরিণতি চাননি মা

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।