ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সরকারি ডাকবাংলো আধুনিকায়নের উদ্যোগ সরকারের

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
সরকারি ডাকবাংলো আধুনিকায়নের উদ্যোগ সরকারের ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় স্থাপিত জেলা পরিষদ ডাকবাংলোগুলোকে অবৈধ উচ্ছেদ মুক্ত করে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারি অর্থায়ন ও প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ প্রকল্পের মাধ্যমে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে এ কথা জানান।
 
তিনি বলেন, আমি জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বলেছি এ বিষয়ে মনোনিবেশ করার জন্য।

কারণ এটা তাদের স্থায়ী আয়ের একটি বড় উৎস হবে।
 
সচিব বলেন, বর্তমানে প্রতিটি ডাকবাংলো এখন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও বখাটেদের দখলে। অনেকেই ডাক বাংলোকে নিজেদের বাড়ি বা অসামাজিক কাজের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে জেলা পরিষদ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে এবং সরকার মূল্যবান রাজস্ব হারাচ্ছে।
 
তিনি বলেন, জেলা পরিষদের সকল ডাকবাংলোকে এইসব অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হবে। কেবল জরুরি কাজে ওইসব এলাকায় যাওয়া সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা এক নাগাড়ে তিন দিন সেখানে থাকতে পারবেন। যে যতো ক্ষমতাধরই হোক না কেনো, সবাইকে এ নিয়ম মানতে হবে।
 
এ সব ডাকবাংলোয় থাকার নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি একবার এক সহকর্মীকে নিয়ে এক ডাকবাংলোয় রাত্রি যাপন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের পাশের ঘরেই উচ্চস্বরে নারী নির্যাতন ও অসামাজিক কাজ চলার চাক্ষুস সাক্ষী হয়ে রাত দুপুরেই আমরা সেখান থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলাম।
 
সচিব বলেন, অনেক সরকারি কর্মচারি আছেন, বাসা ভাড়া না নিয়ে বছরের পর বছর ডাকবাংলোতেই থাকেন। এতে জরুরি প্রয়োজনে সেখানে যাওয়া কর্মকর্তারা আবাসন সংকটে পড়ছেন এবং বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে বেসরকারি রেস্ট হাউজে রাত্রি যাপন করে বেশি বিল জমা দিচ্ছেন। এতে সরকারের রাজস্ব অপচয় হচ্ছে।
 
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নতুন এ উদ্যোগ সম্পর্কে আব্দুল মালেক বলেন, যেখানে ডাকবাংলোগুলো এক তলা আছে, সেখানে সেগুলোকে দোতলা করা হবে। দোতলাকে করা হবে তিন তলা। প্রয়োজনে নতুন আধুনিক ভবন করা হবে। যেখানে নতুন ভবন করার জমি নেই, সেখানে জমি কেনা হবে। সরকারি খরচে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়োজনে প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) এর মাধ্যমে প্রকল্পকে অন্য উচ্চতায় নেওয়া হবে।
 
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জেলা পরিষদকে স্থানীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করছে। তাই জেলা পরিষদকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে তাদের স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করতে চায় সরকার। এজন্য কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি তারই একটি। এছাড়া হাইওয়েতে হাইওয়ে পার্ক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এইসব হাইওয়ে পার্কে একটি বড় পুকুর, বাস-বে, কফি শপ, বুটিক শপ, গেম জোন, পেট্রোল পাম্প, কনফেকশনারি, বাগান ও গেস্ট হাউজ থাকবে। এর পরিচালনার জন্য একটি গাইড লাইন তৈরি করা হবে। জেলা পরিষদ এর পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। এটা ওই জেলা পরিষদের আয়ের একটি বড় উৎস হবে।
 
তিনি বলেন, সরকার জেলা পরিষদকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করাতে বদ্ধ পরিকর। জেলা পরিষদ সার্ভিস নামে যে বিষয়টি আইনে আছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন করতে চায়। এজন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ তাদের সঙ্গে মাটির সম্পর্ক আছে, মানুষের সম্পর্ক আছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
আরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।