ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাক্ষাৎকার-২

৫ টাকার লেনদেন হলেও সাসপেন্ড

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
৫ টাকার লেনদেন হলেও সাসপেন্ড সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন জাহাঙ্গীর কবির। ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: কারাগারে বন্দিদের সাক্ষাতসহ বিভিন্ন অবৈধ সুযোগ পেতে অর্থ লেনদেনের অভিযোগটা বেশ পুরানো। তবে বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কোন ধরনের লেনদেনের ঘটনা নেই বলে দাবি করেছেন সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির। তার দাবি এই কারাগারে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া, কঠোর নজরদারির কারণে এসব অনিয়ম বন্ধ করা গেছে বলে মনে করেন তিনি। 

হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ ৫ টাকাও নেয় আমার কাছে রিপোর্ট চলে আসবে। পানিশমেন্ট দেওয়া হবে।


 
কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের পর কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে কারাগারে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এমন বদলে যাওয়া বিভিন্ন দিক নিয়ে সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন তিনি।

বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট আবাদুজ্জামান শিমুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও প্রশান্ত মিত্র এ সাক্ষাৎকার নেন। ছবি তুলেছেন সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট কাশেম হারুন

প্রশ্ন: বিভিন্ন সময় বাড়তি সুবিধা দিতে বন্দিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়, এ বিষয়ে কী বলবেন?
 
উত্তর:
কারাগারে এখন শুধু সাক্ষাৎ নয় সবকিছুকে সিস্টেমেটিক করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা নিয়মানুযায়ী স্লিপ নিয়ে সাক্ষাৎ করবে। জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করা হয়েছে। কেউ যদি ৫ টাকাও নেয়, আমার কাছে রিপোর্ট চলে আসবে, তারপর ব্যবস্থা নেব। বেআইনি কিছু পাওয়া গেলেই সাথে সাথে সাসপেন্ড।
 
প্রশ্ন: অর্থ লেন-দেন বন্ধ করতে সবকিছু সিস্টেমেটিকেলি মানে, কেমন পদক্ষেপ নিয়েছেন?
 
উত্তর: সরাসরি কারাগারের কেসটেবিলে গিয়ে নিজেই সবাইকে বলি, কেউ কখনো কোন কারণে কাউকে একটি টাকাও দেবেন না। যদি কেউ টাকা-পয়সা দাবি করে আমাকে বলবেন, জেল সুপারকে বলবেন, ডেপুটি জেলারকে বলবেন। আপনার আত্মীয় স্বজনদের বলে দিবেন, সকল ধরনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারের। আপনাদের কোন ধরনের টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।  
সাক্ষাৎকারে কথা বলছেন জাহাঙ্গীর কবির।  ছবি: কাশেম হারুনপ্রত্যেকটা ভবনের নিচে এবং বাইরেও এসব নির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় করারাগারের প্রত্যেকটা জায়গায় এতো স্বচ্ছভাবে চলছে তা কেউ চিন্তাও করতে পারবেন না।
 
প্রশ্ন: সাক্ষাতের সময় অসুস্থ বন্দিদের ক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থা আছে কী না?
 
উত্তর: কেউ অসুস্থ থাকলে তার জন্য আগের কারাগারে অফিসিয়ালি দেখা করার ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু এখানে নাই। তবে মারাত্মক অসুস্থদের ক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা হেল্প করি। বন্দিকে অফিসে ডেকে এনে দেখা করানোর ব্যবস্থা করি। এ ক্ষেত্রে বলা আছে, আমার স্বাক্ষর ছাড়া যদি কারো স্পেশালি দেখা করানো হয় তাহলে তাকে সাথে সাথে সাসপেন্ড করা হবে।
 
এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য একজন ডেপুটি জেলার সবসময় সাক্ষাত রুমে দায়িত্ব পালন করেন। যদি কেউ কোন সাহায্য চান তাহলে তাৎক্ষণিক তিনি ব্যবস্থা নেন। এছাড়া, সাক্ষাতের ক্ষেত্রে যেন টাকা-পয়সার লেনদেন না হয় সে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন একজন ডেপুটি জেলার। তিনি সবকিছু দেখবেন। কোন অভিযোগ থাকলে শুনবেন। পুরান ঢাকাতে যেটা ছিল না। ডিউটিতে যারা আছেন তারা তো আছেই, এটা হচ্ছে এক্সট্রা। তিনি সবকিছু নজরদারি করবেন যেন কোন ধরনের ভোগান্তি না হয়। একসাথে অনেক লোক চলে আসে সেজন্য একটা ভোগান্তি হয়, তারপরেও এক্সট্রিম কোন ভোগান্তি যেন না হয় এজন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
 
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন এখানকার পরিবেশ টাকা লেনদেনে অনুৎসাহিত করে?
 
উত্তর: সুযোগের উপরেই সব কিছু নির্ভর করে। কেউ যদি বন্দিদের কাছ থেকে টাকা নেয় তাহলে তাকে তো সেই ফ্যাসিলিটিটা দিতে হবে। কিন্তু এখানে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা আছে বলে কারো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
 
‘এ সব দিক থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে স্যাটিসফাইড’ বলেন তিনি।
 
(চলবে...সাক্ষাৎকারের তৃতীয় পর্ব)
পড়ুন প্রথম পর্ব: মায়ের কারণেই আজ আমি সিনিয়র জেল সুপার

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এজেডএস/এসজেএ/পিএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad