ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘শ্রদ্ধা’য় বানানো মুক্তিযুদ্ধের ফলক ‘অসম্মান-অবহেলায়’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
‘শ্রদ্ধা’য় বানানো মুক্তিযুদ্ধের ফলক ‘অসম্মান-অবহেলায়’ একটি ফলকের ওপরে ঘুমোচ্ছে একজন। আরেকটি ফলকের পেছনে মূত্রত্যাগ করছেন আরেকজন। এমনই অশ্রদ্ধা-অসম্মান-অবহেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলকগুলো। ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা

ঢাকা: স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম স্মরণ এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন স্বরূপ রাজধানীর ওসমানী উদ্যানে বানানো হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের স্মৃতিফলক। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা-অযত্নে এখন সেগুলো পরিণত হয়েছে ‘অশ্রদ্ধা-অসম্মান-অবহেলা’ প্রদর্শনের ফলকে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, সেই যুদ্ধের স্মারক ফলকের এমন অযত্ন-অবহেলায় ক্ষুব্ধ সচেতন নাগরিকরা।

ওসমানী উদ্যানের অবস্থান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় ‘নগর ভবন’র সামনে।

নগর ভবন, সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হাইকোর্ট সংলগ্ন হওয়ায় বলা চলে নগরের একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে। অথচ এই কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও যেন কারও নজরে পড়ছে না মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ফলকে।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) উদ্যানটির বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে তোলা ১১টি সেক্টর ফলক ঘুরে অযত্ন, অবহেলা, অশ্রদ্ধা আর অসম্মানের চিত্রই দেখা যায়।

ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাএক নম্বর সেক্টর ফলকের গায়ে লাগানো হয়েছে রঙ-বেরঙের পোস্টার। ফলকের গায়ের লেখাগুলোও অস্পষ্ট হয়ে গেছে।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাদুই নম্বর সেক্টর ফলকের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাতিন নম্বর সেক্টর ফলকের ওপর ঘুমিয়ে আছে ছিন্নমূল মানুষ। ফলকটির ওপর শুকোতে দেওয়া হয়েছে কাপড়ও।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাতিন নম্বর সেক্টরেরই মতো দশা চার নম্বর সেক্টরের। যেন কাপড় শুকোনোর জন্যই এই ফলক বানানো হয়েছে।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাপাঁচ নম্বর সেক্টর ফলকের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। ফলকটির চারপাশ কুকুর, ছাগল আর মাদকসেবীদের দখলে।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাছয় নম্বর সেক্টর ফলকের এক পাশে আড্ডা দিচ্ছে মাদক সেবনকারী কয়েকজন নারী-পুরুষ। অপর পাশে পা ছড়িয়ে ঘুমোচ্ছে একজন।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাসাত নম্বর সেক্টর ফলকের ওপর পা তুলে মোবাইল ফোনে আলাপ করছেন একজন। পাশে ঘুমোচ্ছেন আরেকজন।  
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাকারও আবাসস্থলও হয়ে গেছে যেন আট নম্বর সেক্টর ফলক। এই ফলকেরও চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানানয় নম্বর সেক্টর ফলকটি যেন কাঁথা-কম্বল-পোশাক-আষাক শুকোতে দেওয়ার মোক্ষম জায়গা।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাছিন্নমূল মানুষের ছোটখাট বসতি যেন দশ নম্বর সেক্টরের ফলক।
ছবি: আনোয়ার হোসেন রানাএগারো নম্বর সেক্টরের ফলকের ওপর পা তুলে অথবা ফলকে বসে পা ছড়িয়ে বসে কয়েকজন। কয়েকজন সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে করছেন আয়েশ।

একেবারে নগর ভবনের সামনে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে থেকেও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক এভাবে নষ্ট ও অসম্মানিত হতে থাকায় ক্ষুব্ধ নাগরিকদের প্রশ্ন, কেউ কি এগিয়ে আসবে? কয়েকদিনের জন্য নয়, স্থায়ীভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য?

বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।