ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লিবিয়ায় অপহরণে জড়িত জামাই-শাশুড়িসহ আটক ৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
লিবিয়ায় অপহরণে জড়িত জামাই-শাশুড়িসহ আটক ৩

মাদারীপুর: লিবিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠিয়ে সেখান থেকে অপহরণ করে দেশে বসে মুক্তিপণ আদায় করছে একটি চক্র। বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে মুক্তিপণের লাখ লাখ টাকা অপহরণকারীদের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জামাই-শাশুড়িসহ তিনজনকে আটক করেছে সিআইডি পুলিশ।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) দিনগত রাতে মাদারীপুর জেলার শিবচর থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটকদের সিআইডি হেড অফিসে নেওয়া হয়েছে।

এরা হলেন- শিবচরের মির্জারচর এলাকার মুজিবর জমাদ্দার তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম ও তার মেয়ের জামাই নাওডোবা এলাকার হান্নান মিয়া।

শিবচর থানা সূত্র জানায়, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পূর্ব মির্জারচর গ্রামের লিবিয়া প্রবাসী মুজিবর জমাদ্দার (৪৮) দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি ব্যবসা করতেন। বছর পাঁচেক আগে তিনি লিবিয়া পাড়ি জমান। কিছুদিন পর তার ছোট ভাই দাদন জমাদ্দার ও তার ছেলে রায়হান জমাদ্দারকে লিবিয়া নিয়ে যান। বেশকিছু দিন আগে মুজিবর জমাদ্দার ও দাদন জমাদ্দার দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু মুজিবর জমাদ্দারের ছেলে রায়হান জমাদ্দার এখনও লিবিয়ায় রয়েছেন।

এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে লোক নেওয়ার নাম করে অবৈধভাবে হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে টাকা উপার্জন করছেন। এছাড়া লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে। লিবিয়ায় অপহরণ করে মুক্তিপণের টাকা দেশে বসে ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ করতো চক্রটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় এক থেকে দেড় মাসে শিবচর ব্র্যাক ব্যাংক শাখায় মুজিবর জমাদ্দার ও তার স্ত্রী নুরজাহান এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের শিবচর শাখায় তাদের জামাতা হান্নান মিয়া ব্যাংক হিসাব খোলেন। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে প্রচুর পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়। প্রায় ২ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানের ১০/১৫টি শাখা থেকে তাদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হয়।

অস্বাভাবিক এই লেনদেনের বিষয়টি সন্দেহ হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন পাঠায়। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ের ব্যবধানে তাদের হিসাব নম্বরে প্রচুর পরিমাণ টাকা জমা হওয়ার ব্যাপারে অনুসন্ধানে নামে। সে সূত্র ধরে ধরে সিআইডিতে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মুজিবর জমাদ্দার ও তার স্ত্রী নুরজাহান বেগমকে (৩০) আসামি করে একটি মামলা করা হয়। মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হলে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাদের জামাতা একই উপজেলার নাওডোবা গ্রামের শামসুদ্দিন মিয়ার ছেলে হান্নানকেও (৩০) গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক মুজিবর জমাদ্দার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব মির্জারচর গ্রামের হাবিবুর রহমান জমাদ্দারের ছেলে।

ব্র্যাক ব্যাংকের শিবচর শাখা ব্যবস্থাপক মোস্তাক হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে মুজিবর জমাদ্দার ও তার স্ত্রী নুরজাহান বেগমের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দুইটির লেনদেন বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তাদের অ্যাকাউন্টে ইতোপূর্বে দেশের বিভিন্ন স্থানের শাখা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা থেকে আসা সিআইডির উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম স্বামী-স্ত্রী ও জামাতাসহ তিন জনকে আটক করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়েছে। এই টাকা হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে অর্জন করা হয়েছে।

মানি লন্ডারিং আইনে ওই তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ