ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চারাগাছ বাঁচাতে সুদানে বাংলাদেশি পাটের বিপুল চাহিদা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
চারাগাছ বাঁচাতে সুদানে বাংলাদেশি পাটের বিপুল চাহিদা সুদানে বাংলাদেশি পাটের বিপুল চাহিদা

রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে ১৫ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানির পর ২০১১ সালে সুদান ভেঙে বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় দক্ষিণ সুদান নামের আরেকটি স্বাধীন দেশ।

জাতিসংঘ-স্বীকৃত ১৯৩ তম দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে দক্ষিণ সুদান। আর গোটা দেশটিকে সবুজে ভরে দিতে এরই মধ্যে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ সুদান সরকার।



কিন্তু ঊষর মরুময়তা আর রোদের প্রচণ্ড তাপে সে অঞ্চলে সবুজ চারাগাছ বাঁচতে পারছে না। সবুজ চারাগাছকে বাঁচাতে তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে সূর্যতাপরোধী ছাউনি ও  আচ্ছাদনের। আর এ ক্ষেত্রে পাটে তৈরি ছাউনি ও  আচ্ছাদনই সবচেয়ে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

তাই বিশাল চাহিদার কথা জানিয়ে বেশ ক’বার বাংলাদেশের কাছে পাট ও পাটে তৈরি পাতলা চট আমদানি করার আগ্রহ জানিয়েছে দক্ষিণ সুদান। কিন্তু বাংলাদেশ সে চাহিদা পূরণ করতে পারেনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইং-এর এক কর্মকর্তা বাংলানিউজের কাছে এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশ থেকেই পাট নিতে চায়। এজন্য তাদের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এখন থেকে পাট ও চটের নমুনা সংগ্রহ করে তারা দেখেছেন বাংলাদেশের পাট দিয়ে গাছের গায়ে আচ্ছাদন ও উপরে ছাউনি দিলে চারাগাছগুলো নিরাপদ থাকছে।

কিন্তু বাংলাদেশ থেকে চাহিদামতো পাট না পেয়ে দক্ষিণ সুদান অবশেষে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ভারত, পাকিস্তান ও চীন থেকে নিম্নমানের পাট আমদানি করছে।

সুদান সরকারের তথ্যমতে, ২ লাখ বর্গ কিলোমটার এলাকা জুড়ে রয়েছে তাদের বনাঞ্চল।

এ বিশাল বনাঞ্চল দেশটির প্রায় ৩০ শতাংশ জায়গাজুড়ে রয়েছে।

তবে অধিকাংশই হলো সফটউড। যার  রফতানিযোগ্যতা নেই।   আর হার্ড-উড বা  শাল, সেগুন বা মেহগনির মত কাঠের বাণিজ্যমূল্য অনেক। এ ধরনের মূল্যবান কাঠের বন খুব অল্প অঞ্চলজুড়ে রয়েছে দক্ষিণ সুদানে।

এ বনের কাঠ চোরাচালান নিয়েও এ অঞ্চলে প্রায়শই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়ে থাকে।

স্বাধীনতার আগে ২০০৭ সালে জাতিসংঘ পরিবেশ প্রোগ্রাম ( ইএনইপি)  এ জরিপে জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদান যদি পরিকল্পিতভাবে গাছ রোপন করে তাহলে বছরে ৫ কোটি (৫০ মিলিয়ন) ডলার রাজস্ব পাবে শুধু কাঠ রপ্তানি করে।

রফতানিযোগ্য কাঠের ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বনাঞ্চল রয়েছে খুব কম সংখ্যক দেশের। এদের মধ্যে ভারত,লাওস, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড অন্যতম। মিয়ানমার ছাড়া অন্য দেশগুলোর বনের গাছ কাটা নিষিদ্ধ। মিয়ানমার অবশ্য পরিকল্পিত বনায়নও করে থাকে।

ইন্দোনেশিয়াও কাঠ রফতানি করে তাদের পরিকল্পিত বন থেকে।

কিন্তু ২০১৪ সালের এপ্রিলে মিয়ানমারের কাঠ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসায় বিশ্ববাজারে দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

এসব বিষয়কে মাথায় রেখেই দক্ষিণ সুদান হার্ডউড বা বাণিজ্যিকভাবে মূল্যবান গাছের চারা রোপনের মহাপরিকল্পনাটি হাতে নিয়েছে। আর  সেজন্যই যে চারাগাছ লাগানো হবে সেগুলোকে বাঁচাতেই সুদান সরকার বাংলাদেশের উৎকৃষ্ট সোনালি আঁশ পাবার জন্য মরিয়া। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
কেজেড/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।