ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরিকল্পিতভাবে জনিকে হত্যার দাবি পরিবারের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
পরিকল্পিতভাবে জনিকে হত্যার দাবি পরিবারের পরিকল্পিতভাবে জনিকে হত্যার দাবি পরিবারের

ঢাকা: সাকুরা বারের কর্মীদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে জনি ওরফে বাবা জনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।

পরিবারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, জনিকে মারতে সাকুরা বারের ভেতর থেকেই লাঠি ও হকিস্টিক সরবরাহ করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে।

পুলিশ বলছে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জানতে সাকুরা বারের মালিকসহ কর্মীদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।    

এর আগে, রোববার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর পরীবাগ এলাকায় সাকুরা বারের কর্মীদের হামলা নিহত হয় জনি (৩২) নামের এক যুবক। এ ঘটনায় ওই বারের মালিকসহ ৩৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।  

প্রাথমিক অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ জনির লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিয়ে যায়। পরে জনির বড় ভাই নয়ন জনির লাশ শনাক্ত করে।  

নয়ন বাংলানিউজকে জানান, পরিকল্পিতভাবে আমার ছোট ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। জনি ঢাকার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ওয়ার্ড যুবদলের সেক্রেটারি পদের প্রার্থী ছিলেন। এই কোন্দলের কারণেও জনিকে হত্যা করা হতে পারে।

তিনি বলেন, ওইদিন আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বারে। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে লাশ বার থেকে দূরে নিয়ে ফেলে রাখা হয়।  

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জনির বিরুদ্ধে একটি খুনের অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও ফুল ব্যবসায়ী সেলিম শাহীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন জনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সেক্রেটারি পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। জনির বিপক্ষে ছিলে মিজান। দলীয় পদের লোভে তাদের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হয়।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) পরীবাগের সাকুরা বারে গিয়ে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের পর বারটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, সম্পূর্ণ অগোছালো অবস্থায় পড়ে আছে বারটি। মাটিতে পড়ে আছে মদের গ্লাস। পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা।

পরীবাগ সুপার মার্কেটে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। সাকুরা বার সংলগ্ন রাস্তায় (নবাব হাবিবুল্লাহ রোড) থাকা চায়ের টং দোকান ও একটি হোটেল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় সু্ত্রে জানা গেছে, বারের ভেতরে মারামারি ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় জনিকে বার থেকে প্রায় ৪০ গজ দূরে একটি চায়ের দোকানের সামনে ফেলে রাখা হয়। ওই স্থানের ঠিক অপরপাশে রয়েছে নিউ ভাই ভাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে স্থানীয়রা জানায় বারের এই কাছাকাছি এসব দোকানপাট প্রায় সারা রাতই খোলা থাকতো।

এদিকে, পরীবাগ সুপার মার্কেট সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় বারটি বন্ধ করা হয়েছে, তবে মার্কেটের দোকান খোলা রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. আজিমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলছে। সাকুরা হোটেলের কর্মীদের নিয়ে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

কোনো রাজনৈতিক কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন ধরণের তথ্য আসছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্ত থেকে বিস্তারিত জানানো যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এসজেএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।