ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘জনতার মুখোমুখি’ মেয়র মঞ্চেই দিলেন সমাধান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
‘জনতার মুখোমুখি’ মেয়র মঞ্চেই দিলেন সমাধান বক্তব্য রাখছেন মেয়র সাঈদ খোকন। ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: একটি অনুষ্ঠান মঞ্চে বসা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। মঞ্চেই তার কাছে সমস্যা তুলে ধরলেন ৪৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। মেয়র মঞ্চে বসে সঙ্গে সঙ্গেই সমাধানের নির্দেশ দিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটি প্লট চত্বরে ‘জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নাগরিকদের কথা শুনছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন।  

অনুষ্ঠানে নাগরিকদের পক্ষ থেকে দৃষ্টি আকর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস সংকট, গেন্ডারিয়া ডিআইটি প্লট পুকুর দখলমুক্তকরণ, নাগরিকদের নিরাপত্তা, গৃহহীন ও প্রতিবন্ধী মানুষকে আর্থিক সুবিধা দেওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেন মেয়র।

সভায় প্রথমে স্থানীয় কাউন্সিলর নাসির আহম্মদ ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গ্যাস সংকটের তুলেন ধরেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ৬টার পর থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এই এলকায় গ্যাস থাকে না। ফলে বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এছাড়া, ওই ওয়ার্ডের শহীদ নগরে একটি মসজিদ, একটি কমিউনিটি সেন্টার, পানি নিষ্কাশন ও বেহাল রাস্তা সংস্কার এবং রাস্তাগুলোতে এলইডি লাইট লাগানোর দাবি জানান তিনি।

সাঈদ খোকন এসব সমস্যা শুনে তা সমাধানের নির্দেশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

স্থানীয় নাগরিক মকবুল হোসেন ও আর্দশ একাডেমির শিক্ষক কাওসার চৌধুরী ডিআইটি প্লটের পুকুর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান। তারা বলেন, পুকুরে যেন আগের মতোই মাছ চাষ ও গোসল করা যায় এবং রাস্তা দিয়ে হাঁটা-চলা করা যায়।

জবাবে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, পুকুর ভরাট করে রিকশার গ্যারেজ ও দোকান ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে যদি হাইকোর্টে কোনো মামলা না থাকে, তবে আগামী রোববারই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

নাজমুন্নাহার নামে এক নারী অভিযোগ করেন পুলিশি হয়রানির। এ বিষয়টিও সুরাহার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন মেয়র।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে তোপের মুখে পড়েন গেন্ডারিয়া ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হেলেন। সেখানকার বস্তির বাসিন্দা ফাতেমা আখতার তাকে বলেন, ভোট চাওয়ার সময় কাউন্সিলর হেলেন আমাদের সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখন আর আমাদের চেনেন না। তাই মেয়রের কাছে বলছি, আমরা খুব কষ্টে আছি, আমাদের সহযোগিতা করেন।

মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী দাবিদার ইসমত আরা তার থাকার জায়গা-জমি নেই উল্লেখ করে বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়া পর মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমি আপনার সহযেগিতা চাই।  

মোহাম্মদ নূরে দোহা নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী বলেন, রাস্তার পাশে আমার একটা দোকান ছিলো। কিন্তু উচ্ছেদের পর থেকে আমি কিছু করতে পারছি না।

এই দু’জনের বক্তব্য শোনার পর মেয়র বলেন, আপনারা আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। আমি সহযোগিতা করবো।

গেন্ডারিয়ার হরিচরণ রায় রোডের ফ্যাক্টরি গলির বাসিন্দা মজিবুর রহমান মেয়রের কাছে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানান। জবাবে মেয়র বলেন, এবারের বৃষ্টির পর এই এলাকার কাজ ধরা হবে।

আসাদুজ্জামান নামে একটি মামলার আসামি মেয়রের উদ্দেশে বলেন, বিনা কারণে আমাকে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।  

জবাবে মেয়র বলেন, সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা আপনাকে আইনি সহযোগিতা দেবেন।

মইনুদ্দিন চিশতি নামে একজন ওয়াসার দুর্গন্ধযুক্ত পানি নিয়ে অভিযোগ করেন। সঙ্গে সঙ্গে মেয়র ওয়াসার কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন।

এই সময় মিনিরা আক্তার মিলা নামে একজন চাকরির সুযোগ চেয়ে বলেন, নগর ভবনে দু’বার অফিস কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে লিখিত, মৌখিক এবং ভাইভা পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমি এ পদে চাকরির সুযোগ চাই।  

মেয়র ওই প্রার্থীকে আবেদনের মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহ্বান করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এমএফআই/এইচএ/

আরও পড়ুন
** ডিএসসিসির ৭৭ শতাংশ সড়ক এলইডি লাইটের আওতায়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।