ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কার্গোতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কার্গোতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা কীর্তণখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী দিবা সার্ভিস এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়-ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: কীর্তণখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গো ডুবির ঘটনায় পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্গোটি উদ্ধার কিংবা কয়লা অপসারণ না করা হয় তবে, তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকির হবে বলে মনে করছেন তারা।

পরিবেশবাদীদের সংগঠনের বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক লিংকন বায়েন বাংলানিউজকে বলেন, কয়লার সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন দূষিত পদার্থ থাকে। যা পানিতে মিশে পানির স্বাভাবিক গুণাগুণ নষ্ট করে।

ফলে উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণী পানিতে বসবাসের ক্ষেত্রে হুমকির মুখে পড়তে পারে। অনেক সময় মাছও মারা যায়। এজন্য উচিত কয়লা পরিবহন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া।

তিনি বলেন, নদী, খাল, জলাশয় সবকিছুই রাষ্ট্রের জনগণের। এগুলো দূষণ রক্ষায় সরকারি দফতরগুলো ভূমিকা পালন করে থাকে। তাদেরই উচিত কয়লার বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া। কীর্তণখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী দিবা সার্ভিস এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়-ছবি: বাংলানিউজএ বিষয়ে বরিশাল পরিবেশ অধিদফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এইচএম রাশেদ জানান, কয়লা জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকারক। তবে পুরো নৌ-দুর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি পরিষ্কার বোঝা যাবে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও বিভিন্ন জটিলতায় জাহাজ উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সোমবার পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।

তবে কার্গোর কয়লা ত্রিপল দিয়ে মোড়ানো থাকার বিষয়টি জানা গেছে জানিয়ে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা জানান, রোববার (২৩ এপ্রিল) সকালে বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক চলে আসার পর এখন পর্যন্ত গ্রিন লাইন-২ লঞ্চটি ও ডুবো যাওয়া কার্গোটি উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি নেই। উভয় জাহাজের মালিকপক্ষকে তাদের জাহাজ তোলার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি কয়লা আমদানিকারক ও কার্গো মালিককে অল্প সময়ের মধ্যে কয়লার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে ডুবে যাওয়া কার্গোটির দুই প্রান্ত চিহ্নিত করে দু’টি স্প্যারিক্যাল বয়া দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে অন্যান্য নৌযান নিরাপদে চলাচল করতে পারে। কার্গোর কয়লা পরিশোধিত না অপরিশোধিত সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানাতে পারেন নি।

গত শনিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে বরিশালের কীর্তণখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী দিবা সার্ভিস এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় ৫২৫ টন কয়লা নিয়ে কার্গোটি ঘটনাস্থলেই ডুবে যায়।

অপরদিকে গ্রিনলাইন লঞ্চটি সামান্য ফেটে গেলেও তা যাত্রীদের নিয়ে নদী তীরে চলে আসে। ঘটনার দিন সন্ধ্যার মধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এমএস/এএটি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।