ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কালো কাপড়ে কবর ঢেকে শ্রমিকদের মর্মন্তুদ স্মরণ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
কালো কাপড়ে কবর ঢেকে শ্রমিকদের মর্মন্তুদ স্মরণ! রানাপ্লাজা ধসে নিহতদের স্মরণ জুরাইন কবরস্থানে-ছবি-সুমন শেখ

ঢাকা: পাঁচ সারিতে ২৯১টি কবর। এরমধ্যে কিছু কবর কালো কাপড়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে । করুণ শোকে বিধ্বস্ত পরিবারগুলোর এই উদ্যোগ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে শ্রমিকদের প্রাণহানির সেই মর্মন্তুদ কাহিনী।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানাপ্লাজা ধসের মর্মান্তিক সে ঘটনায় লাশ হন শ্রমজীবী সহস্রাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকেরই অন্তিম শয্যা হয় এই জুরাইন কবরস্থানে।

 

রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেলো জড়ো হয়েছেন নিহত দের পরিবার পরিজনের অনেকেই। এসেছেন ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রমিকফ্রন্ট, গার্মেন্টস শ্রমিকলীগ, শ্রমিক সংহতি, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামসহ শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সব সংগঠনের প্রতিনিধিরা। গার্মেন্টস মালিক সংগঠন বিজিএমিএর পক্ষ থেকেও ছিলেন কেউ কেউ।

সে সময়ে নিহত শ্রমিকদের অনেকেরই পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি, যাদের দাফন করা হয় এখানে। সেইসব শ্রমিকদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানালেন শ্রমিক নেতারা।

তাদের আরও দাবি, রানা প্লাজার সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে শ্রমিক কলোনী নির্মাণ করা হোক।  

শ্রমিকদের মানসম্পন্ন জীবন যাপন উপযোগী মজুরি ন্যুনতম ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিও শোনা গেলো এখানে যারা কথা বলছিলেন তাদের মুখে।  

কথা হচ্ছিলো গার্মেন্ট শ্রমিক নেতা জলি তালুকদারের সাথে। তিনি বলেন, রানাপ্লাজাসহ অন্যন্য দুর্ঘটনার সবগুলোই একেকটি হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার চাই।  

রানা ছাড়া কোন আসামিকে এখনও ধরা হয়নি, বলেন তিনি।  
 

এছাড়াও দাবি উঠলো ২৪ এপ্রিল সব গার্মেন্টেসে  সাধারণ ছুটি ঘোষণার।

এখনও অনেক শ্রমিক বেকার অক্ষম, এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, এক জরিপ প্রতিবেদনে দেখা গেছে রানা প্লাজার আহত শ্রমিকদের ৪৩ ভাগ এখন পর্যন্ত বেকার। যাদের অধিকাংশ পঙ্গু ও অসুস্থ। তাদের পুনর্বাসন দরকার।  

রানার জমিতে স্থায়ীভাবে অক্ষম শ্রমিকদের পুনবাসনের দাবিও জানালেন জলি তালুকদার।  

আরেক শ্রমিক নেতা মনজুর মঈন বলেন, সেই শুরু থেকেই আমরা এসব দাবি করে আসছি। কিন্তু একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো শ্রমিক হত্যাকাণ্ড বেড়েছে।  

রোববার বিকেলে এসব দাবিতে রানা প্লাজার সামনে শ্রমিক সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে বলেও জানালেন এই শ্রমিক নেতারা।  
 
বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে কবরের ঘাসগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  

এ সংগঠনের ডেপুটি সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম জানালেন, শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।  

বাংলাদেশ সময় ০৮৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এসএ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।