ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টার্মিনালের ভূমি নিয়ে রেলের বাণিজ্য!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
টার্মিনালের ভূমি নিয়ে রেলের বাণিজ্য! টার্মিনালের ভূমি নিয়ে রেলের বাণিজ্য!

ঢাকা: ঢাকা সিটি এলাকার বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ফুলবাড়িয়ায় রেলওয়ের একটি জমি ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশে’ লিজ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পরিবহন নেতারা।নিয়মানুযায়ী রেল কর্তৃপক্ষ ওই জায়গাটি সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে জায়গাটি একটি বণিক সমিতির নামে ‘লাইসেন্স’ দিয়ে দিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়।

ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) বৈঠকে বিষয়টি তোলা হলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পরিবহন নেতারা। দ্রুত জায়গাটি সিটি করপোরেশনের কাছেবুঝিয়ে দিতে বৈঠক থেকে মন্ত্রণালয়ে খবর দেয়া হয়।


 
রোববার (২৩ এপ্রিল) ডিটিসিএ এর বৈঠকে রাজধানীর যানবাহনের জন্য একটি বিশেষ পরিকল্পনা এবং চার হাজার বাস নামনোর পরিকল্পনা নিয়ে যখন কথা উঠে, তখনই রেল মন্ত্রণালয়থেকেও ওই বৈঠকে জায়গাটি ‘আনন্দ বিপণীবিতান’কে দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
 
সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুব্ধ হন সেখানে উপস্থিত পরিবহন সেক্টরের দুই শীর্ষ নেতা। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ ঢাকা সিটিকরপোরেশনের মাধ্যমে বিশেষ পরিবহন সেবা চালুর একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, সড়ক ও সেতুমন্ত্রীও অবগত।
 
বৈঠকের বক্তব্যে খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, ১৯৮৪ সালের আগে ফুলবাড়িয়ায় একটি মাত্র টার্মিনাল ছিলো। এরপর মহাখালী, সায়েদাবাদ এবং গাবতলীতে টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। তারপরের সব সরকারই ঢাকা সিটির বাস টার্মিনাল নির্মাণে ‘আনন্দবাজার’ জায়গা নির্ধারণ করে দেয়।

এনায়েতুল্লাহ জানান, বর্তমান সরকারের সময় ডিটিসিএ বুয়েট থেকে কয়েক কোটি টাকা টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ‘সম্ভাব্যতা যাচাই’ করেতে ব্যয় করেছে। কিন্তু আমাদের কাছেঅবাক লাগলো, আমরা কিছুই জানি না। রেল এখানে কি করছে?
খন্দকার এনায়েত উল্লাএনায়েতুল্লাহ আরও জানান, উন্নত বিশ্বের মতো রাজধানী ঢাকায় স্মার্টকার্ডের গাড়ি চালুর জন্য এ জায়গাটি প্রয়োজন। এটি ছাড়াও নিমতলী, মোহাম্মদপুর, উত্তরা মিরপুরে ওকাচপুরে ডিপো নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগুচ্ছি।
 
এই বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বাস ডিপো প্রয়োজন। প্রস্তাবিত ডিপোর একটি রেলের এ আনন্দবাজারের ভূমি।
 
বৈঠকে প্রশ্ন উঠে রেল কি করে টার্মিনালের জন্য সরকার থেকে ঠিক করে দেয়া একটি ভূমি বিপণীবিতান সমিতির কাছে লাইসেন্স দেয়। পরে অবশ্য মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরিবহননেতারা শান্ত হন। দ্রুত জায়গাটি সিটি করপোরেশনে হস্তান্তরের জন্য বৈঠকে উপস্থিত রেল মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিকে জানানো হয়।
 
এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয় ডিটিসিএ’র ওই সভায় জানায়, ৩.৯৭ একর ভূমির মধ্যে (পশ্চিম অংশে) আনন্দ বণিক সমিতির অনুকূলে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের লাইসেন্স দেয়াহয়েছে। যা বর্তমানে ‘আনন্দবাজার রেলওয়ে সুপার মার্কেট নামে পরিচিত। অবশিষ্ট ২.৮৭ ভূমিকে বহুতল আইকনিক ভবন নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে।
 
এরপরই ওই সভায় উপস্থিত পরিবহন নেতা বিষ্ময় প্রকাশ করে কথা বলতে ফ্লোর চান।
 
তাদের মধ্যে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের একজন নেতা বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তারা অবৈধ টাকার লেনদেন করে জায়গাটি বণিক সমিতির কাছেলাইসেন্স দিচ্ছে।
 
এর আগে এনিয়ে বণিক সমিতির নেতারা মামলাও করেছেন। ওই নেতা বৈঠকে সড়কমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বলেন, ‘আপনি মন্ত্রী না থাকলে আপনাকেও আসামি করতো তারা। আপনার সচিব আমাদের সঙ্গে মামলার আসামি। রেলের লোকজনইশিখিয়ে দেয় মামলা করার জন্য। কীভাবে বণিক সমিতি রেলের জায়গার ওপর ৭তলা মার্কেট তোলে? -প্রশ্ন রাখেন ওই পরিবহন নেতা।
 
মন্ত্রী এসময় জানান, আর কেউ মামলা করতে পারবে না।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এসএ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।