ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ওজন বেশি হওয়ায় ফিরে গেলো ‘নির্ভীক’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
ওজন বেশি হওয়ায় ফিরে গেলো ‘নির্ভীক’ এমভি গ্রিন লাইন-২-ছবি-বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালের কীর্তণখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী দিবা সার্ভিসের এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর উদ্ধারে গিয়ে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক। 

উদ্ধারকারী জাহাজের ওজন উত্তোলন ক্ষমতার চেয়ে এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চ ও মামুন মাসুদ-১ নামের কার্গোটির ওজন কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় রোববার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসেন উদ্ধারকারী দল।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীকের উত্তোলন ক্ষমতা আড়াইশ টন।

সেখানে গ্রিন লাইনের ওজন ৬৪৫ টন। অপরদিকে কার্গেটিতে ৫২৫ টনের মতো কয়লাই ছিলো। আর কার্গোর ওজন যদি হয় ৪’শ টনের মতো তাহলে প্রায় হাজার টন ওজন কার্গোটির। আর পানিতে ডুবে যাওয়ায় উভয় নৌ-যানের ওজন আরো বেড়েছে।

তিনি বলেন, শনিবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উদ্ধারের জন্য বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা পার্ক সংলগ্ন জেটি থেকে নির্ভীক ঘটনাস্থল চরবাড়িয়ায় যায়। তবে ওজন বেশি হওয়ায় রোববার দুপুরে নির্ভীক ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসেছে। বর্তমানে কোনো বিকল্প চিন্তাভাবনা করার সুযোগও নেই। তাই বিকল্প পদ্ধতিতে জাহাজ দু’টি উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন মালিকরা। তবে কার্গোটি উদ্ধারের আগে ভেতরে থাকা কয়লা তুলে ফেলতে হবে।

এদিকে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা জানান, নদীর যে অংশে কার্গোটি ডুবে গেছে তারা সে জায়গাটি সনাক্ত করেছেন। তবে উভয় জাহাজের উদ্ধারকাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এখন মালিকপক্ষ জাহাজ দু’টি উদ্ধারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

অপরদিকে নৌ-দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি জানিয়ে বরিশাল নৌ-পুলিশের নৌ-বন্দর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তারা ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে নৌ-চলাচলের ব্যবস্থা রাতেই চালু করেছেন। এখন নৌ-যানগুলোর মালিকপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজের জেনারেল ম্যানেজার আ. ছত্তার বাংলানিউজকে বলেন, তাদের কোম্পানির সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক এসে তাদের লঞ্চটিকে তুলতে না পেরে ফিরে গেছে। উদ্ধারকারী জাহাজের অপেক্ষায় থেকে তাদের জাহাজের ভেতরে বেশি পরিমাণে পানি ঢুকে আরো জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পানির মধ্যেই সারানোর চেষ্টা চালাবেন। পরে ভাটার সময় লঞ্চের ভেতরের পানি বের করে এনে সেটিকে ভাসানোর কাজ করবেন।

অপরদিকে কার্গো কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখলেও উত্তোলনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে বরিশালের কীর্তণখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী এমভি গ্রিন লাইন-২ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় ৫২৫ টন কয়লা নিয়ে কার্গোটি ঘটনাস্থলেই ডুবে যায়। অপরদিকে গ্রিন লাইন লঞ্চটির সামনের অংশ ফেটে গেলে সেটি যাত্রীদের নিয়ে নদীতীরে চলে আসে। তাই নিরাপদেই এ লঞ্চের ৪’শ যাত্রী তীরে উঠতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এমএস/আরআর/জেডএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।