ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ইয়াবা চালান রোধে ‘স্পেশাল জোন’ হচ্ছে কক্সবাজার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
ইয়াবা চালান রোধে ‘স্পেশাল জোন’ হচ্ছে কক্সবাজার

ঢাকা: দেশব্যাপী মাদকের ভয়াবহতা এখন অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ। দেশের তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ আটকে আছে মাদক জালে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অব্যাহত অভিযান ও নানা পদক্ষেপের পরেও পাল্টাচ্ছে না দৃশ্যপট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশে মাদক দ্রব্যের মধ্যে ইয়াবার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। সহজলভ্যতা এবং বহনের সুবিধার কারণে নিমিষেই ছড়িয়ে পড়ছে এই মরণনেশা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে যে পরিমাণ ইয়াবা প্রবেশ করছে তার প্রায় ৯০ শতাংশই আসছে মায়ানমার থেকে। কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকা হয়ে সমুদ্রপথে প্রবেশ করছে এসব ইয়াবা।

ইয়াবার এই পাচার নিয়ন্ত্রণ করতে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নড়েচড়ে বসেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকাকে এবার স্পেশাল জোন ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র জানায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ডিএনসির দেশব্যাপী কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে জোরদার করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অব্যাহত অভিযান চালানো হলেও সীমান্ত এলাকাতে প্রতিষ্ঠানটির তেমন তৎপরতা নেই। মাদক প্রবেশ ঠেকাতে এবার সীমান্ত এলাকার দিকেও নজর দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য, প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার ও টেকনাফকে স্পেশাল জোন হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে।

ডিএনসি জানায়, মায়ানমার থেকে নাফ নদী হয়ে উখিয়া, টেকনাফ ও কক্সবাজারের ২৫টি পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা প্রবেশ করছে দেশে। পরে সেসব ইয়াবা মূলত সড়কপথে ছড়িয়ে যাচ্ছে সারাদেশে।

মায়ানমার সীমান্তে ইয়াবা তৈরির অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে। আর এসব কারখানা বন্ধে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্প্রতি মায়ানমারকে অবহিত করা হযেছে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র।

ডিএনসির মহাপরিচালক সালাহউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে দেশের অভ্যন্তরীণ নজরদারির পাশাপাশি ইয়াবার প্রধান রুট কক্সবাজার ও টেকনাফকে স্পেশাল জোন হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে।

ডিএনসির তথ্যমতে, গত মার্চ মাসে দেশব্যাপী ৩৫ লাখ ১৬ হাজার ৬১৯ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিএনসির অভিযানে জব্দ হয়েছে ৬৬ হাজার ১৮১ পিস। মার্চে দেশব্যাপী ৮ হাজার ৭১৯টি মাদক মামলার মধ্যে ডিএনসির দায়ের করা মামলা ৮৯১টি।

অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তুলনায় অর্জন কম প্রসঙ্গে ডিএনসির এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ডিএনসি মূলত পাড়া-মহল্লায় ভোক্তা পর্যায়ে অভিযান চালায়। কিন্তু বর্ডার এলাকাগুলোতে ডিএনসির তেমন কার্যক্রম নেই। সেখানে কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানের আগে ডিএনসি তাদেরকে তথ্য সরবরাহ করে সহায়তা করে। বর্ডার এলাকাতে কার্যক্রম বাড়াতে একটি স্পেশাল জোন ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসির ডিজি সালাহউদ্দিন মাহমুদ।

এদিকে, মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মরক্ষার্থে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এসব ক্ষেত্রে ডিএনসি কর্তৃপক্ষ নিরস্ত্র হয়েই বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে। এজন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্য কোনো বাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালাতে হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। তবে এখন অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করতে স্পেশাল ফোর্সের কথা ভাবছে ডিএনসি।

সালাহউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্পেশাল ফোর্সের প্রস্তাব রেখেছি। তিনিও বিষয়টি সুবিবেচনায় রেখেছেন। এই সক্ষমতা পেলে আমাদের অভিযানে আরও গতি বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
পিএম/আরআর/এমজেএফ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।