ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া

ঢাকা: বন্যায় হাওর অঞ্চলের ছয় জেলার ক্ষতিগ্রস্ত তিন লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ৫০০ টাকা করে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। 

হাওর এলাকায় অতিবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যার বিষয়ে গৃহিত কার্যক্রম এবং করণীয় নির্ধারণে রোববার (২৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে একথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।  
 
এছাড়া ওএমএস এবং ফেয়ার প্রাইজের মাধ্যমে ১৫ টাকা ও ১০ টাকা কেজি দরে এক লাখ ৭১ হাজার পরিবারের মধ্যে চাল বিক্রি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

রোববার থেকেই এসব কর্মসূচি শুরু হবে।

এরইমধ্যে তিনি নিজে এলাকা পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট ও নেত্রকোনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সুনামগঞ্জে ৮০-৮৬ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় চিহ্নিত করে কীভাবে উৎরে ওঠা যায় তার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
 
“তাদের দাবি ছিল ৩-৬ মাস খাদ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। আমরা তাদের বলে এসেছি, ৩ মাসও না, ৬ মাসও না। যতক্ষণ পর্যন্ত পানি না নামবে, ঘরে ফিরে না যাবেন, স্বাভাবিক জীবন যাপন না করতে পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত খাদ্য দিয়ে সহায়তা অব্যাহত রাখবো। আমাদের খাদ্যের অভাব নেই। পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত চালিয়ে যাবো। ”
 
তিনি বলেন, আজ থেকে শুরু করে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দশ দিন, একশ’ দিনের কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। এ কর্মসূচিতে প্রতিমাসে ভিজিএফের মাধ্যমে ৩০ কেজি চাল এবং লবণ, তেল, মরিচ কেনার জন্য ৫০০ করে টাকা দেবো।
 
“প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে ৩৩ থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন চাল বিনামূল্যে বিতরণ করবো। আর ৫০০ করে টাকায় মোট প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। ”
 
যারা রিলিফ নেবেন না তাদের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
 
দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হচ্ছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ওই এলাকায় একটু যান। এমন কোনো অবস্থা সৃষ্টি হয়নি যে দুর্গত ঘোষণা করতে হবে। তাদের অভাব আছে, সে অভাব আমরা মিটিয়ে দিচ্ছি। কষ্ট লাঘব করছি।  
 
সভায় জানানো হয়, এক হাজার ২৭৬ টন মাছ এবং তিন হাজার ৮৪০টি হাঁস মারা গেছে।  
 
কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, এসব এলাকায় দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার কম উৎপাদন হলেও হাওরের বাইরে যে বোরো ধান উৎপাদন হচ্ছে তা লক্ষ্যমাত্রার দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন হবে। আর আউশ আমনে প্রণোদনা দিলে উৎপাদন বেড়ে যাবে।  
 
স্লুইচ গেট অপরিকল্পিত নির্মাণের কারণে বন্যা কিনা- প্রশ্নে পানি সম্পদ সচিব বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ঢল- বন্যা হচ্ছে। এজন্য আরও উঁচু করা যায় কিনা, সেটা দেখবো। আগামীতে উপজেলাভিত্তিক বাঁধ নির্মাণের কাজগুলো করা হবে।
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।  
 
কমিটিতে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন সদস্য থাকবেন। এ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব কমিটির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
 
“তারা দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কী করণীয়, সম্পূর্ণ সরেজমিনে গিয়ে দেখে সেই রিপোর্ট পেশ করবেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নিতে থাকবো। ” 
 
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, কৃষি, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও অধিদফতরের মহাপরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন সভায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭/আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ