ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘রাওদাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
‘রাওদাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে’ মোহাম্মদ আতিফ (ছবি: সংগৃহিত)

রাজশাহী: মালদ্বীপের মডেল ও রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাওদাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে আবারও অভিযোগ করেছেন তার বাবা মোহাম্মদ আতিফ।

রোববার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আত্মহনন নয়, তার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে ডা. মোহাম্মদ আতিফ বলেন, তিনি নিজেও একজন ডাক্তার। ফ্যানে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করলে যেসব চিহ্ন চোখে-মুখে ও শরীরে ফুটে ওঠার কথা তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি রাওদার শরীরে। বরং শ্বাসরোধ করে হত্যা করলে যেসব আলামত ফুটে ওঠে তার সবগুলোই রয়েছে রাওদার শরীরে।

তার মেয়ে যে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে তার কোনো প্রমাণও নেই। আদৌ তার মেয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলেছিলো কী না সেটাও পরিষ্কার নয়।

কারণ- একজনও দেখেনি যে রাওদা ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। তার মৃত্যুর পর যে ছবি পাওয়া যায় তা বিছানায় শোয়ানো অবস্থায়। ছবি না থাকলে কীভাবে বাবা হিসেবে তিনি বিশ্বাস করবেন যে তার মেয়ে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে?- এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

আতিফ আরও বলেন, আত্মহত্যা করলে লালা বেরিয়ে আসে। হাত-পা ছড়ানো থাকে। কিন্তু রাওদার হাত মুষ্টিবদ্ধ ছিলো। সাধারণত শ্বাসরোধে হত্যা করা হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া রাওদার গলায় হাতের আঙ্গুলের স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। তার গলায় যে দাগ রয়েছে তা সুতি কাপড়ের ওড়নার নয়। সুতি কাপড়ের যে ওড়না দিয়ে রাওদার গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ বলছে তা মিথ্যা।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. আতিফ রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন তুলে বলেন, রাওদার গলায় যে চিহ্ন রয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে কিসের না নিশ্চিত হওয়ার জন্য এক্স-রে এমনকি এমআরআই করা প্রয়োজন। কিন্তু তা করা হয় নি। এটা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের গাফিলতি এবং প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ড. আতিফ গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, পুলিশ ও ডিবি তদন্তে গাফিলতি করেছে। তবে পুলিশের অপরাধ বিভাগ গুরুত্ব নিয়ে তদন্ত করছে। তাদের তদন্তের ওপর আস্থা এসেছে। এ সময় প্রকৃত ঘটনা বের করতে গণমাধ্যমেরও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এর আগে গত ২৯ মার্চ রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের মহিলা হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে রাওদা আতিফের (২০) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ মার্চ দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কোনো আলামত মেলেনি।

পরে ১ এপ্রিল দুপুর সোয়া ২টার দিকে মহানগরীর হেতমখাঁ গোরস্থানে তার দাফন শেষ হয়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল সোমবার (২৪ এপ্রিল) পুনঃময়নাদন্তের জন্য কবর থেকে তার মরদেহ উত্তোলনের কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এসএস/ওএইচ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।