ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভালোবাসা নিয়ে কুকুরের পাশে ‘প-ফাউন্ডেশন’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
ভালোবাসা নিয়ে কুকুরের পাশে ‘প-ফাউন্ডেশন’ কুকুরের জন্য ভালোবাসা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: বৃষ্টির মধ্যে মিরপুরের ৬০ ফুট হয়ে বাসায় ফিরছিলেন উদয়। ২ নম্বরের কাছাকাছি যেতে তার চোখে পড়ে রোডের পাশে পড়ে আছে একটি বাচ্চা কুকুর। লেগুনার বাড়ি খেয়ে আহত হয়েছে তিনমাসের বাচ্চা কুকুর ছানাটি। পায়ের হাড় ভেঙে বৃষ্টির মধ্যে অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে।

উদয় কোলে তুলে নেন কুকুরটিকে। পশু হাসপাতালে চিকিৎসা করান।

পরে প-ফাউন্ডেশনের (পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার)  রেসকিউ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে নিয়ে যান। প্রায় সাতদিন প্যারালাইজডের মতো পড়ে ছিল কুকুরটি। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়েছে। এখন চার পায়ে দৌঁড়াতেও পারে।  

উদ্ধার করা কুকুরটির নাম হৃদয়ই দিয়ে গেছেন ‘ডোরা’। পাবনা থেকে এক ফার্ম হাউজের মালিক ইতোমধ্যেই ডোরাকে দত্তকও নিয়েছেন।  

শুধু ডোরাই নয়, ভাবুক, তৃষ্ণা, তিথিসহ অনেক কুকুর ও বিড়াল প-ফাউন্ডেশনের যত্ন-ভালোবাসায় ফিরে পেয়েছে নতুন জীবন।  

ভালোবাসা নিয়ে কুকুরের পাশে ‘প-ফাউন্ডেশন’-ছবি-বাংলানিউজপশুপ্রেমী তরুণদের গড়া প-ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে আছেন স্থপতি রাকিবুল ইসলাম এমিল। যার জীবন জ‍ুড়ে রয়েছে পশুদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। আহত কুকুর-বিড়ালকে উদ্ধার করে আশ্রয় দেয় তার সংগঠনটি। সেইসঙ্গে দত্তক নেওয়ারও ব্যবস্থা করে। পাশাপাশি কুকুর যে ভালো বন্ধু-এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজও করছে এ ফাউন্ডেশন।   

নির্যাতিত ও আহত প্রাণীর চিকিৎসার্থে প-ফাউন্ডেশন সম্প্রতি চালু করেছে প-লাইভ কেয়ার সেন্টার। কুক‍ুর-বিড়ালের চিকিৎসার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এ সেন্টারে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ক্লিনিকে একজন পশু চিকিৎসক সেবা দেন। এছাড়া এখানে কুকুরের জন্য শ্যাম্পু, বেল্ট, খাবার ও ওষুধও পাওয়া যায়। এগুলো বিক্রি করে অবহেলিত কুকুরের সেবায় ব্যয় হবে।  
 
আহত প্রাণীকে সহায়তা, প্রাণীর প্রতি মানুষের মমতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফেসবুক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু প-ফাউন্ডেশনের। সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায় গত বছর।  

ভালোবাসা নিয়ে কুকুরের পাশে ‘প-ফাউন্ডেশন’-ছবি-বাংলানিউজমিরপুর-গাবতলী বেড়িবাঁধের পাশে কুকুরদের জন্য প-ফাউন্ডেশেনের রেসকিউ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। উন্নত বিশ্বের আদলে কুকুরদের এ আশ্রয়কেন্দ্রে এখন ২০টির মতো কুকুর রয়েছে। অনেক কুকুর সুস্থ হয়ে আবার কমিউনিটিতে ফিরে গেছে। আবার কয়েকটি প্রাণীকে অনেকে দত্তক নিয়েছেন

রেসকিউ সেন্টারে কুকুরদের দেখাশোনায় রয়েছেন একজন কেয়ারটেকার। সেখানে রাখা হয়েছে চারণভুমির আদলে উন্মুক্ত স্থান। চিকিৎসার পাশাপাশি যেখানে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াতে পারে কুকুরেরা।  

প-ফাউন্ডেশনের প্রধান রাকিবুল ইসলাম এমিল বাংলানিউজকে বলেন, ‘কুকুর মানুষের বড় বন্ধু। কিন্তু মানুষের আচরণে তা বোঝা যায় ‍না। তার একটাই কারণ, কামড় আর জলাতঙ্ক ভীতি। কুকুরকে জলাতঙ্কের টিকা দিলে এ সমস্যা দ‍ূর হয়। আর কুকুর কখনোই এমনিতে মানুষকে কামড় দেয় না’।  
 
‘কোথ‍াও কোনো কুকুর দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে- এমন খবর পেলে প-ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা তাকে উদ্ধার করে রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসেন। আগে আঘাতের পরিমাণ দেখে পশু হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হতো। এখন নিজস্ব প-লাইভ কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এমসি/আরআর/এএসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ