ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট, দেখার কেউ নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৭
ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট, দেখার কেউ নেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া ভাবেই বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌরুট গুলোতে চলছে স্পিডবোট।

এছাড়া ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্পিডবোট চালকদের বিরুদ্ধে।

দুর্ঘটনা না হলে যেনো দেখার কেউ নেই এ নৌরুটের স্পিডবোটগুলোকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নদীবন্দর সংলগ্ন ডিসিঘাট থেকে প্রতিদিন অর্ধশত স্পিডবোট চলাচল করে। একইভাবে বরিশাল সদর উপজেলার লাহারহাট ফেরিঘাট ও বুখাইনগর থেকেও স্পিডবোট যাত্রী নিয়ে চলাচল করে।

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব স্পিডবোট যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে ভোলা, মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা থেকে মেহেন্দিগঞ্জ, পাতারহাটসহ অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট।  ছবি: বাংলানিউজহরহামেশাই বোটগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে কীর্তনখোলা, কালাবদর, আড়িয়াল খাঁ, তেতুলিয়াসহ বেশ কিছু নদী। এ নদী বর্ষাকালে প্রচন্ড  উত্তাল থাকে। নিরাপত্তার জন্য ছোট এসব স্পিডবোটে যাত্রীদের কাউকেই ব্যবহার করতে দেখা যায় না লাইফ জ্যাকেট।

তবে প্রতিটি স্পিডবোটের ভেতরেই লাইফ জ্যাকেট রাখা আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

স্পিডবোট মালিকরা বলেন, কোনো যাত্রীই লাইফ জ্যাকেট পড়তে চান না। আর চালক দক্ষ হওয়ায় বর্ষার সময় প্রচন্ড ঢেউয়ে কোনো স্পিডবোট দুর্ঘটনার কবলে পরেনি।

স্পিডবোট যাত্রী বিপ্লব বাংলানিউজকে বলেন, দ্রুত ও স্বল্প সময়ে যাওয়ার জন্য এ স্পিডবোট ব্যবহারে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় থাকে না কারো। ছোট ছোট স্পিডবোট গুলোতে ৯/১১ জন করে যাত্রী নেওয়া হয়, বোর্টে কোনো যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয় না।

আবার একেক সময় একেক ধরনের ভাড়া নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। যা অন্য রুটের সঙ্গে হিসেব করলে অনেকটাই বেশি বলে দাবি করেন যাত্রী বিপ্লব।

স্পিডবোট চালকরা বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্পিডবোট চালানো হয়। যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরতে বললে অনেকেই পরতে চান না এতে যাত্রীদের সঙ্গে অনেক সময় বাক-বিতান্ডা লেগে যায়।

এদিকে, রাতে জরুরি সেবার নামে টর্স লাইট ব্যবহার করে এসব রুটে স্পিডবোট চালানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ঘাটের শ্রমিকরা বলেন, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পরে দু’টি স্পিডবোটের সংঘর্ষে মা-মেয়ে নিহত হওয়ার পরে অনেকটাই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এ দুর্ঘটনার পর স্পিডবোট মালিক-শ্রমিক মিলে এখন রাতের বেলা স্পিডবোট চালান না। রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে।

বরিশাল থেকে ভোলা কিংবা ভোলা থেকে বরিশালে চিকিৎসকসহ অন্য পেশার মানুষ কাজ শেষে রাতে চলাচল করতেন তাদের বিকেলের মধ্যে ঘাটে আসার জন্য বলা হয়েছে। নয়তো বিকল্প পথে যেতে বলা হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্পিডবোট।  ছবি: বাংলানিউজস্পিডবোট মালিক সামিতির সভাপতি কালাম শরীফ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি বোটে লাইফ জ্যাকেট আছে, তবে যাত্রীরা তা পড়তে চান না, অনেক সময় হাতে নিয়েও বসে থাকেন। তবে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি  ঠিক নয়, বরিশাল থেকে ভোলার যে দূরত্ব তাতে জনপ্রতি ভাড়া রাখা হয় মাত্র ২৫০ টাকা।

তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ থেকে অনুমতি নিয়ে স্পিডবোট চালনো হয়। তবে লাহারহাট ও বুখাইনগরের বিষয়টি তাদের আওতাভূক্ত নয়। এগুলো স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বরিশাল ডিসি ঘাটে সকাল থেকে বিকেল অর্থাৎ সন্ধ্যা হওয়ার আগ পর্যন্ত স্পিডবোট চলাচল করে থাকে।

স্পিডবোট চালনায় অনিয়মের বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নদীবন্দরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মোতালেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এমএস/আরআইএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।