স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনো বাস টার্মিনালই না থাকায় যাত্রীবাহী বাসগুলো যত্রতত্র সড়কের ওপরেই পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। এতে কুয়াকাটার সৌন্দর্য্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পর্যটকসহ স্থানীয়দের চলাফেরায় সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।
ঝড়-বৃষ্টি কিংবা রোদ যাই হোক যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে সড়কেই, পুরো কুয়াকাটায় কোথাও নেই যাত্রীছাউনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুয়াকাটা পৌরসভার টিঅ্যান্ডটি রেস্ট হাউজ পার হয়ে মোড় ঘুরলেই রাস্তার দুইপাশে দূরপাল্লার পরিবহন ও বিআরটিসির বাসগুলো যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
বাসগুলোর জন্য রাস্তার পাশেই খুপরি ঘরের মতো গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার।
সড়ক ধরে বেড়িবাঁধের চৌরাস্তায় গিয়ে সৈকতের দিকে তাকালে হাতের ডানে (পশ্চিম দিকে) দেখা যাবে পটুয়াখালীর আন্তঃজেলা ও বরিশাল, বরগুনাগামী বাসের অবৈধ টার্মিনাল। বাসের কারণে সরু হয়ে আসছে রাস্তা। হোটেল ও জেলে পল্লিতে অনেক কষ্ট করে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীদের।
বেড়িবাঁধ জিরোপয়েন্টের দিকে একটু এগোলেই দেখা যাবে, সারি সারি দূরপাল্লার পরিবহন দাঁড়িয়ে রয়েছে পরবর্তী ট্রিপের জন্য। এতে ঢাকা পড়ে গেছে সমুদ্র সৈকত, পর্যটন কেন্দ্রটি ঘুরে দেখার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্দেশিকা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রতিবাদ করলেও এ বিষয়ে কোনো লাভ হয় না।
বরিশাল থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আতিকুর রহমান বলেন, পুরো কুয়াকাটায় প্রবেশের জন্য একটি মাত্র প্রধান সড়ক, যা দিয়ে সৈকত, মার্কেট কিংবা দর্শনীয় স্থানগুলোতে যেতে হয়। আর এ গুরুপূর্ণ সড়কটির এমন দশা। এছাড়া যাত্রীছাউনি না থাকায় রোদ-বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের দোকানের সামনে বাস রাখার বিষয়ে প্রতিবাদ করলেও এখন আর তার তোয়াক্কা কেউ করে না। কারণ কোনো লাভ নেই। ক্রেতারা গাড়ির জন্য দোকান দেখতে পান না, তাই ব্যবসার অবস্থা ভালো না। রাস্তার ওপরে গাড়ি রাখার কারণে হাঁটা-চলা থেকে শুরু করে নানাবিধ সমস্যায় পড়ছেন পর্যটকরা। যত দিন টার্মিনাল না হবে তত দিন ভোগান্তি থেকেই যাবে।
পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা দুলু মৃধা বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। ওখানে ব্যবসা করছেন পর্যটকদের জন্য। আর পর্যটকদের মাধ্যমে যত বেশি আয় করা যাবে তত বেশি লাভবান হবে সরকার।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আ. বারেক মোল্লা জানান, কুয়াকাটাকে পর্যটক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে যে মাস্টারপ্ল্যান নেওয়া হয়েছে সেখানে একটি বাস টার্মিনালেরও নকশা রয়েছে। তবে, সেটি মূল পর্যটন স্পট থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে। এতেও তো পর্যটকদের ভোগান্তি সৃষ্ট হবে। আমরা চাই, এটা ৩ কিলোমিটারের মধ্যে এবং ৬ একর জায়গা নিয়ে করা হোক। তবে, পৌরসভার নিজস্ব অর্থ না থাকায় এ মুহূর্তে ভূমিক্রয় করা সম্ভব নয়। বাস টার্মিনালের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে অবহিত করা হয়েছে।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাকে ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এমএস/ওএইচ/এমজেএফ