ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চালু হচ্ছে নতুন ছয় বর্ডার হাট

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
চালু হচ্ছে নতুন ছয় বর্ডার হাট

ঢাকা: চলমান চারটি বর্ডার হাটের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আরো ছয়টি বর্ডার হাট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলতি মাসের দিল্লি সফরেই দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা সাক্ষর হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত চার হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্তে বর্ডার হাটের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১০টিতে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে আরো চারটি হাট স্থাপনের বিষয়েও দুই দেশ মৌখিক ভাবে সম্মত হয়েছে।

যদিও ভারত দুই দেশের সীমান্তে কম করে হলেও ২২ টি নতুন হাটের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ প্রাথমিক ভাবে ১০টিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চেয়েছে।

তার আগে বাংলাদেশ সীমান্তে মোট ৬১টি বর্ডার হাট করার সিদ্ধান্ত নিজেদের মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে পাশ করে নেয় ভারত। ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর সীমান্তে নতুন হাট স্থাপনের বিষয়ে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা।

এর আগে বর্ডার হাট সংক্রান্ত সমঝোতার মেয়াদ শেষ হওয়ায় কিছু সংশোধনী প্রস্তাবসহ নতুন খসড়া ২০১৫ সালের অক্টোবরে ভারতের কাছে পৌঁছে দেয় বাংলাদেশ। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর ২০১৬ সালের নভেম্বরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সংশোধিত সমঝোতার খসড়া চূড়ান্ত হয়।

নতুন সমঝোতাটি ২৩ অক্টোবর ২০১৩ থেকে কার্যকর দেখিয়ে এর সময়সীমা করা হয়েছে পাঁচ বছর। কোন পক্ষ এটি বাতিল না করলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে এটি পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন হবে।

সংশোধিত সমঝোতা অনুযায়ী বর্ডারহাটে কেনা-বেচা হওয়া পণ্য তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত সকল পণ্য, শাড়ী, হস্তশিল্পজাত পণ্য ও স্টেশনারী। উভয় দেশের ক্রেতা বিক্রেতার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ২৫ থেকে ৫০ জনে। অন্যদিকে ক্রয়সীমা করা হয়েছে ১০০ ডলারের স্থলে ২০০ ডলারে। যদিও ভারত এই সীমা ৩০০ ডলার করার প্রস্তাব দিয়েছিল।  

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১০ সালের একটি সমঝোতা অনুযায়ী দশটি সীমান্ত হাট স্থাপনের কথা রয়েছে। সে বছরের ১০-১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে এ বিষয়ে সম্মত হয় দুই দেশ। এরপর সে বছরের ২৩ অক্টোবর সমঝোতা সাক্ষর করে দুই দেশ। বছরের এখন পর্যন্ত মোট চারটি হাট চালু রয়েছে।  

দুই দেশের মানুষের শুল্কমুক্তভাবে পণ্য কেনাবেচা সহজলভ্য করতেই নেওয়া হয়েছে এ উদ্যোগ।

২০১০ সালের সমঝোতা অনুযায়ী সীমান্ত হাটে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা চানাচুর, চিপস, আলু, তৈরি পোশাক, মাছ, শুঁটকি, মুরগি, ডিম, সাবান, শিম, সবজি, গামছা ও তোয়ালে, কাঠের টেবিল ও চেয়ার, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত লোহার তৈরি পণ্য বিক্রির অনুমতি পায়। অন্যদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ফল, সবজি, মসলা, মরিচ, হলুদ, পান, সুপারি, আলু, মধু, বাঁশ ইত্যাদি বিক্রির অনুমতি পান।
 
নতুন ছয়টি হাট হলো- মৌলবীবাজারের জুড়ীর পশ্চিম বটুলী ও উত্তর ত্রিপুরার পালবস্তী, কমলগঞ্জের কুরমাঘাট ও কামালপুরের ধলাই, বাংলাদেশ-মেঘালয় সীমান্তর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পাহাড়ের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সায়দাবাদ ও মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি পাহাড়সংলগ্ন নালিকাটা, মেঘালয়ের ইস্ট খাসি হিলসের রিংকু ‍ও সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের বাগান বাড়ি, ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার ভুঁইয়াপাড়া ও মেঘালয়ের দক্ষিণ গারো পাহাড়ের শিববাড়ি।

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, দুই দেশই সীমান্ত হাটকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। এই হাটগুলোর অবকাঠামো ভারত করে দেয়। কিছু দিন আগে ভারতের বিশাখাপত্তমে অনুষ্ঠিত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সফরে সমঝোতাও হলো। এতে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
আরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ