ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

র‌্যাব পরিচয়ে ডিবির চাঁদাবাজি, এসিসহ ১১ জন পুলিশে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
র‌্যাব পরিচয়ে ডিবির চাঁদাবাজি, এসিসহ ১১ জন পুলিশে

ঢাকা: নিজ বাহিনীর পরিচয় গোপন করে অন্য একটি বাহিনীর সদস্য সেজে রাজধানীর একটি জুয়ার আসর থেকে টাকা-পয়সা মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তৃতীয় একটি বাহিনীর হাতে আটক হয়ে এবার চতূর্থ বাহিনীর হাতে সোপর্দ হয়েছেন ডিবির ১১ জন। 

এরা সকলেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)র পূর্ব বিভাগের সদস্য। তবে ওই ভূয়া অভিযানে গিয়ে নিজেদের র্যাব হিসেবে পরিচয় দেন।

এই অপকর্মের সময় তাদের ধরে ফেলেন মিলিটারি পুলিশের সদস্যরা। পরে তাদের পাঠানো হয়েছে পুলিশের হেফাজতে।  

আটককৃতদের মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশের একজন সহকারী কমিশনারও রয়েছেন। এদের মধ্য থেকে আট জনকে এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আর ঘটনার মূল উদঘাটনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।   

দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, মূল ঘটনা ঘটে গত মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকার একটি ক্লাবে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ওই ক্লাবে ঢুকে লোকজনের টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন।  

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কাফরুলের কচুক্ষেতের ইব্রাহীমপুর এলাকায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে একটি মাইক্রোবাসযোগে ডিবির দলটি ওই ক্লাবে যায়। নেতৃত্বে ছিলেন সহকারী কমিশনার রুহুল আমিন। সেখানে একটি অবৈধ জুয়ার আসরে গিয়ে নিজেকে র‌্যাব-৪'র মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা পরিচয় দেন রুহুল আমিন। এবং  মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। না দেওয়া হলে সবাইকে গ্রেফতার করারও হুমকি দেন।  

এসময় তারা ক্লাবের লোকজনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সাও ছিনিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এক পর্যায়ে ডিবির ওই কর্মকর্তা চারজনকে আটক করে গাড়িতে উঠিয়ে সেনানিবাস এলাকায় ঢুকে পড়েন। ক্লাব থেকেই কেউ একজন কাফরুল থানায় ফোন করে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে যান কাফরুল থানার ওসি শামীম হোসেন। তিনি বিষয়টি মিলিটারি পুলিশকে জানালে মিলিটারি পুলিশ গাড়িটি শনাক্ত করে তা আটক করে।  

পরে ডিবির দলটিকে পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়।  

সূত্র নিশ্চিত করেছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ই মূলত তারা জানান, র‌্যাব নয়, তারা ডিবির পূর্ব বিভাগের সদস্য।

এর আগে গত মাসেও একইভাবে গোয়েন্দা পরিচয়ে আসা এই দলটি  টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১৬ মার্চ তারিখেও দলটি ওই ক্লাবে আসে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। ওই সময় তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। ক্লাবের দুই সদস্যকে গাড়িতে তুলে নিয়ে একজনের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে একটি ব্যাংকের বুথ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।  

এই দলের আসা-যাওয়ার দৃশ্য ক্লাবের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা রয়েছে বলে সূত্র জানায়।  

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।  

এ ছাড়া ঘটনার সময় থানায় সোপর্দ করা সবাইকে সাময়িক বরখাস্ত করে রিজার্ভ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, কোনও ব্যক্তি সদস্যের দায় গোটা পুলিশ বাহিনী নেবে না। শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়ালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময় ১০০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
এমএমকে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।