ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্দশাগ্রস্ত নাগরিকদের সহায়তা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
দুর্দশাগ্রস্ত নাগরিকদের সহায়তা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

থিম্পু থেকে: ভুটানের থিম্পুতে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক সেমিনার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি রাষ্ট্রের উচিত তাদের সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত নাগরিকদের সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করা।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালে থিম্পুর রয়েল বাংকোয়েট হলে তিন দিনের এই সেমিনারের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিয়োনপো তান্ডিন ওয়াংচুক।

সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং অটিজম ও নিওরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাডভায়জরি কমিটির চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রের কেউ অবহেলিত থাকবে না এটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সরকারগুলোর উচিত প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা।
 
তিনি বলেন, আক্রান্তরা কোথায় সেটা কোনো বিষয় নয়। তারা তাদের আশপাশের মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা, সহযোগিতা ও সম্মান প্রত্যাশা করে।

সবাইকে অটিজমে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শারীরিক অক্ষমতার বাইরেও তাদের যে বহুমুখী প্রতিভা রয়েছে আসুন আমরা তা স্বীকার করে নেই। এবং তাদের সমাজে সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার উপযোগী করি।

‘যদি বিশ্বব্যাপী অটিজমে আক্রান্ত মানুষগুলো ও তাদের পরিবারকে কলঙ্কিত বলা হয়, তারা বৈষম্যের শিকার হন এবং তাদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়। মানব বৈচিত্র্যের অংশ হিসেবে হিসেবে তাদের সম্মান জানাতে হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার আক্রান্তরা নিজ নিজ দেশের অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।  
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: পিআইডিআগামী দিনগুলোতে অটিজম ও প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত মানুষগুলোর জীবন বদলে যাবে বলে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এসব মানুষকে সামাজিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা থেকে কর্ম; বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় সব কিছুর সহায়তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।
 
অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্তদের কল্যাণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ারও প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
 
শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার শনাক্ত করে তাদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন।
 
ডিজঅর্ডার আক্রান্ত শিশুর সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার আক্রান্তদের জন্য আলাদা ও ইউনিক শেখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
 
টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রার মূল মন্ত্র অনুযায়ী ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার আক্রান্তরা অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। বয়স্কদের পাশাপাশি অটিজম আক্রান্ত ৮০ শতাংশ মানুষ বেকার থাকে। এসব মানুষের জন্য উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করতে হবে।

বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ও অটিজমে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আইনগত, সামাজিক ও চিকিৎসার মতো নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছি।

সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে প্রধান করে বাংলাদেশে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক আট সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি করার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশসহ বর্হিবিশ্বে অটিজম বিষয়ক সচেতনতা ও এ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সহায়তা ও অবদানে অনেকের জীবন বদলে গেছে।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে অটিজম আক্রান্ত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলের প্রশংসা করেন।
 
সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া উচিত বলে মত দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭/আপডেট ১৬৩৩ ঘণ্টা
এমইউএম/এইচএ/

আরও পড়ুন
** ভুটানে বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।