ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাষ্ট্র ও জনস্বার্থে তিন অঙ্গের সুসমন্বয় প্রয়োজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
রাষ্ট্র ও জনস্বার্থে তিন অঙ্গের সুসমন্বয় প্রয়োজন ছবি- পিআইডি

ঢাকা: দেশের তিনটি অঙ্গ লেজিসলেটিভ, জুডিশিয়ারি ও এক্সিকিউটিভের মাঝে সুষম সমন্বয়, সম্পর্ক ও সমঝোতা থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জনস্বার্থের পক্ষে এ তিন অঙ্গের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। রাষ্ট্রের স্বার্থকে সমুন্নত রাখতে হবে’।

‘একটি রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলতে পারে তখন, যখন এ তিনটি অঙ্গের মধ্যে একটি সুসর্ম্পক বা সমঝোতা থাকবে’।

সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আলোচনার মধ্য দিয়ে তার সমাধান করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজধানীর কাকরাইলে জাজেস টাওয়ারে বিচারপতিদের জন্য নবনির্মিত বহুতল ভবনের উদ্বোধনকালে শনিবার (১৫ এপ্রিল) এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ লেজিসলেটিভ, জুডিশিয়ারি ও এক্সিকিউটিভের মধ্যে একটি সমঝোতা থাকবে এবং একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করবে’।

‘এখানে একে অপরকে অতিক্রম করে নয়, ক্ষমতার শক্তি দেখিয়ে নয়। ক্ষমতা কারো কিন্তু কম নয়’।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কে কাকে সম্মান করবে, কে কাকে করবে না, কে কার সিদ্ধান্ত নাকচ করবে, কে কার সিদ্ধান্ত মানবে না মানবে- এসব দ্বন্দ্বে যদি আমরা যাই। তাহলে কিন্তু একটি রাষ্ট্র সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে না’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে চলতে হলে এ তিনটি অঙ্গকে যথাযথভাবে তার কর্মপরিকল্পনাটা চালাতে হবে’।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সকলের কিছু ক্ষমতা থাকে। কিন্তু সে ক্ষমতাটা প্রয়োগের ক্ষেত্রে ততোটুকু প্রয়োগ করতে পারি, যেটা জনস্বার্থের পক্ষে। আর কতোটুকু করা আমাদের উচিত না বা করলে জনস্বার্থ ব্যহত হতে পারে। বা তিনটি অঙ্গের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে- এ বিবেচনাটা সকল পক্ষের থাকা উচিত বলে আমি মনে করি’।

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার পাশাপাশি সব শ্রেণির মানুষের অধিকার রক্ষার ব্যবস্থা করে গিয়েছিলেন। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি তাকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে না দিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল ন্যায়বিচারের চাকাকেও’।

ছবি- পিআইডি

‘আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যবস্থা করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি। কয়েকজন পালিয়ে থাকলেও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বেশিরভাগের ফাঁসির রায় কার্যকরও হয়েছে। পলাতক বাকিদেরও ধরে আনার চেষ্টা চলছে। বেশ কয়েকজন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিও কার্যকর হয়েছে। এসব বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে’।


বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের হত্যাকারী এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় প্রদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাহসের সঙ্গে সেই বিচারের রায় যারা দিয়েছিলেন, পরিচালনা করেছিলেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই’।

আইন প্রণয়নের সুদীর্ঘ প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন একটি আইন প্রণয়ন করি, তখন এ আইনটি দীর্ঘ পথ পরিক্রম করে আসে। আমরা হঠাৎ করে পার্লামেন্টে আইন পাস করি না। কোনো আইন যখন প্রণয়ন করা হয়, তা করাই হয় জনগণের কোনো না কোনো স্বার্থে’।
 
‘জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে আইন প্রণয়ন ও সংসদে চূড়ান্তভাবে তা পাস করেন সংসদ সদস্যরা। ’
 
কোনো আইন নাকচ বা বাতিল করার আগে আরো বেশি বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই আইন যদি দেখি, দু’জন বসে নাকচ করে দিলেন। তারপর আর কিছুই করার থাকলো না। তাহলে, এতো দিন ধরে খাটাখাটুনি .. সব ব্যর্থ হয়ে যায়’।  
 
‘এসব ক্ষেত্রেও আরো বিবেচনা করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি’।
 
রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়া এবং বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া। এখানে কিন্তু আমার কোনো ক্ষমতা নেই’।
 
প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে কোনো রকম কিছু হলে এখানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করাটাই ভালো। এক্ষেত্রে আমাদের কিছ করণীয় থাকে, নিশ্চয় আমাদের পক্ষ থেকে তা দেখবো’।
 
‘ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হলে জনগণের কাছে ভুল ধারণা নিয়ে যাবে’।
 
দেশের অগ্রগতি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
এমইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad