ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভোগ মডেল, মেডিকেল ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ রাজশাহীতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
ভোগ মডেল, মেডিকেল ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ রাজশাহীতে রাওদা আতিফ

রাজশাহী: রাজশাহীর নওদাপাড়া এলাকায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের মহিলা হোস্টেল থেকে এক বিদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মালদ্বীপের নাগরিক এই শিক্ষার্থী প্রখ্যাত ভোগ ম্যাগাজিনের মডেল হয়েছিলেন।

মেডিকেল কলেজ হোস্টেলটির দ্বিতীয় তলার ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। রাওদা আতিফ (২০) নামে ওই শিক্ষার্থী মালদ্বীপ থেকে এখানে পড়তে এসেছিলেন।



রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল আজিজ রিয়াজ বাংলানিউজকে জান‍ান, রাওদা এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সকালে তার সহাপাঠীরা ক্লাসে রাওদাকে না পেয়ে তার কক্ষে যায়। সেখানে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে সবাই মিলে দরজা ভাঙে। পরে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে কর্মকর্তাদের খবর দেয়।

এ সময় কলেজ ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা গিয়ে মরদেহ দেখে থানায় খবর দেন। পরে শাহ মখদুম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে বলে জানান আবদুল আজিজ রিয়াজ নামে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তারা গিয়ে বিদেশি ছাত্রীর মরদেহ পেয়েছেন। কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এদিকে, রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের মালদ্বীপের এই শিক্ষার্থীর মৃত্যু আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

মরদেহের সুরতহালের সময় এ আলামত মিলেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে আপাতত আত্মহত্যার কারণ বলতে পারেনি পুলিশ।

রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাওদা আতিফ (২০) নামে এ মেডিকেল শিক্ষার্থী মালদ্বীপের নাগরিক। তার বাবার নাম আবদুল আতিফ ও মায়ের নাম আমিনা মহাসিমাত। তিনি রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচারে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি কলেজের মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ২০৯ নম্বর ওই কক্ষে ওঠেন রাওদা। এর পর থেকে সেখানেই থাকতেন।

কলেজ হোস্টেলের ইনচার্জ লাইলা আক্তার পুলিশকে জানিয়েছেন, ক্লাশে দেখতে না পেয়ে বেলা ১১টার দিকে রাওদার সহপাঠীরা তাকে ডাকতে ওই কক্ষে যান। এ সময় অনেক ডাকাডাকি করলেও রাওদার সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দরজা ভেঙ্গে তার মরদেহ ঝুলতে দেখেন সহপাঠীরা। এ সময় খবর দিলে কলেজ কর্তৃপক্ষ সেখানে গিয়ে থানায় খবর দেন।

ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করছেন রাওদা। তার গলায় তার চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটকে নিয়ে তারা মরদেহের সুরতহাল করেছেন। কিন্তু ওই চিহ্ন ছাড়া নিহতের মরদেহে তারা অন্য কোনো নির্যাতনের আলামত খুঁজে পাননি।

রাওদা আতিফ এক সময়ে বিশ্বখ্যাত ভোগ ম্যাগাজিনের মডেল হয়েছিলেন এবং সামাজিক মাধ্যমে অত্যন্ত জনপ্রিয় এমন তথ্যে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতেখায়ের আলম বাংলানিউজকে বলেন, এ তথ্যের বিষয়টি আমাদের কাছে নতুন, খতিয়ে দেখবো। তাই সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে প্রেমঘটিত বিষয়ের সূত্র ধরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিছুক্ষণের মধ্যে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়া হওয়া যাবে।

আপাতত এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান শাহ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান।

এদিকে, ঘটনার পর দুপুরে মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, উপ-কমিশনার (পূর্ব জোন) আমীর জাফর ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতে খায়ের আলমসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এর আগে খবর পেয়ে বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে যায় পুলিশ। পরে কলেজের মহিলা হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার ২০৯ নম্বর কক্ষে বিদেশি ছাত্রীর মরদেহ পায়।

রাওদা আতিফ (২০) নামের ওই ছাত্রী বিদেশি কোটায় মালদ্বীপ থেকে এখানে পড়তে এসেছিলেন। হোস্টেলের ওই ব্লকে আরও ছয়জন বিদেশি ছাত্রী থাকেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।